হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ আলোর উৎস ‘হারিকেন’

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩, ১৬:১২

নূরনবী সিদ্দিক সুইন
হারিকেনের মোলায়েম আলো এখন আর দেখা যায় না

হারিয়ে যাচ্ছে এক সময়ের গ্রামীণ আলোর একমাত্র উৎস হারিকেন। বিদ্যুতের আলোর ঝলকানি দেখে এখন আর নতুন প্রজন্মরাও হয়তো বুঝবে না হারিকেন আসলে কী জিনিস?

একসময় আমাদেরই দেখা-গ্রামে সন্ধ্যা হলেই ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকার নেমে আসতো। পড়াশোনা, রান্না বান্না চলতো বাতিতে, যেটাতে থাকতো বিশেষ পৈতা সিস্টেম, বড়জোর হারিকেন দিয়ে। যা জ্বলতো কেরোসিন দিয়ে। 

কোনো বড় জমায়েতে থাকতো হ্যাজাক লাইট (বড় আকৃত্তির হারিকেন) এর ব্যবহার। 

হারিকেন হচ্ছে জ্বালানি তেলের মাধ্যমে বদ্ধ কাচের পাত্রে আলো জ্বালাবার ব্যবস্থা। এর বাহিরের অংশে অর্ধবৃত্তাকার কাচের অংশ থাকে যাকে গ্রামীণ জনপদে চিমনি বলে আর এর ভিতরে থাকে তেল শুষে অগ্নি সংযোগের মাধ্যমে আলো জ্বালাবার জন্য কাপড়ের সলাকা। 

আর সম্পূর্ণ হারিকেন বহন করবার জন্য এর বহিরাংশে থাকে একটি লোহার ধরুনি। আলো কমানো বা বাড়ানোর জন্য নিম্ন বহিরাংশে থাকে একটি চাকতি যা কমালে বাড়ালে শলাকা ওঠা নামার সাথে আলো কমে ও বাড়ে। 

ইতিহাস থেকে জানা যায়, মোঘল আমলে হারিকেনের প্রচলন শুরু হয়। রাতের আঁধারে বিকল্প আলোর উৎস হিসাবে ধীরে ধীরে গ্রামাঞ্চলে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠে। 

কিন্তু কালের বিবর্তনে ও বাজারে আধুনিক ইলেকট্রনিক্স লাইটের সরবরাহ বাড়তে থাকায় ধীরে ধীরে কমতে থাকে হারিকেনের ব্যবহার। 

তবে একসময় রাস্তায় হারিকেন ছাড়া রিক্সা চালাচালে জরিমানা করত পুলিশ। 
আজ দিন বদলে গেছে। এগুলোর ব্যবহার আর নেই। সব জায়গায় চলছে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত দেওয়ার প্রচেষ্টা। এগিয়ে যাও প্রিয় বাংলাদেশ।

সেদিন আচমকা মিরপুর ১৩ নম্বরের একটি দোকানে পেলাম ঐতিহ্যের সেই হারিকেন। যার কাছে আমারও অনেক দায়। এই হারিকেন স্মৃতির স্মারক হয়ে থাকুক প্রজন্ম থেওেক প্রজন্মান্তরে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

লেখকদের নামঃ