রাবি অধ্যাপকের উন্নত জাতের কলার চারা উদ্ভাবন

প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২২, ১৭:২৯

সাহস ডেস্ক

কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত। গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে এই খনার বচনটি অধিক পরিচিত। কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কলা রপ্তানিতে দেশের চাষিরা যেখানে ব্যর্থ সেখানে আশার আলো দেখাচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের একদল গবেষক। অত্র বিভাগের প্ল্যান্ট মলিকুলার বায়োটেকনোলজি ল্যাবে অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উন্নত জাতের কলার চারা উদ্ভাবন করে বিতরণ করেন। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার উন্নত জাতের এই কলার চাষ সম্প্রসারণের জন্য আমন্ত্রিত চাষিদের মধ্যে এই চারা বিতরণ করেন।

প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক তানজিমা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে চারা বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও বিজ্ঞান অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক মো. শাহেদ জামান।

এসময় উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার সংস্থানের জন্য নতুন নতুন জাতের শস্য ও ফলমূল উদ্ভাবন একান্ত প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে দেশের অন্যতম শীর্ষ গবেষণা কেন্দ্র রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে একদল উদ্ভাবনী গবেষক ও প্রয়োজনীয় গবেষণাগার। কৃতি গবেষকদের সাফল্যের স্বাক্ষর উন্নত জাতের এই কলা উদ্ভাবন। আগামী দিনে এই কলা এতদঞ্চলের পুষ্টির চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা যে উন্নত জাতের কলা উদ্ভাবন করেছে তা অন্যদেরও উদ্ভাবনী গবেষণায় অনুপ্রাণিত করবে। আগামীতেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশ তথা বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমরা আশা রাখি।

অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক তানজিমা ইয়াসমিন বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা গবেষণায় নিরন্তর রত রয়েছেন। তাঁদের গবেষণায় সাফল্যের সর্বশেষ স্বাক্ষর এই উন্নত জাতের কলা উদ্ভাবন। এই কলা উচ্চফলনশীল হওয়ায় তা মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। বিভাগের গবেষণাগারগুলোতে চলমান গবেষণা থেকে অচিরেই ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।

আলোচনা সভা শেষে, কলা গাছের বিভিন্ন রোগ, সেগুলোর প্রতিকার, কলা চাষের পদ্ধতি এবং প্রয়োজনীয় কীটনাশক প্রয়োগ সম্পর্কে কলা চাষিদের নিয়ে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালাটিতে আলোচনা করেন টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে উন্নতজাতের কলার চারার উদ্ভাবক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। তিনি টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে উদ্ভাবিত চারাগুলোর গুণাগুণ এবং এই পদ্ধতিতে কলা চাষের লাভজনক দিকগুলো চাষিদের সামনে উপস্থাপন করেন।

এসময় অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন কলা চাষিদের উদ্দেশে বলেন, টিস্যু কালচার কলার চারা লাগালে ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যেই কলার মোচা বের হয় এবং সাধারণ পদ্ধতির চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি লাভ পাওয়া যায়। এছাড়া টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে রপ্তানিযোগ্য ইফনিফরম কলা উৎপাদন করা সম্ভব।

আয়োজিত এই বিশেষ অনুষ্ঠানে অত্র বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকবৃন্দ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক ও গবেষকেরা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত