রেকর্ড পঞ্চমবারের মত আইপিএল চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) ১৩তম আসরের ফাইনালে দিল্লি ক্যাপিটালসকে খুব সহজেই হারিয়ে রেকর্ড পাঁচবারের মত শিরোপা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। আর প্রথমবারের মত ফাইনালে উঠে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো দিল্লি ক্যাপিটালসকে।

মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।

এদিন টসে জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লি ক্যাপিটালস। ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান সংগ্রহ করে দিল্লি।

তবে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মুম্বাই বোলারদের সামনে শুরুটা ভালো হয়নি দিল্লির। দলীয় শূন্য ও ১৬ রানে ২ উইকেট হারায় রিকি পন্টিংয়ের কোচিংয়ের দলটি। স্টোইনিস ও আজিঙ্কা রাহানেকে ফেরান ট্রেন্ট বোল্ট। এরপর ব্যক্তিগত ১৫ রানে জয়নাত যাদবে শিকারে পরিণত হন ওপেনার শিখর ধাওয়ান।

তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ঋশভ পন্থকে নিয়ে ৯৬ রানের পার্টনারশিপ গড়েন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। কিন্তু মুম্বাই বোলাররা দারুণভাবে ফিরে এসে সেই আশা পূর্ণ হতে দেননি। ফিফটির দেখা পাওয়া পন্থকে ফেরান নাথান কোল্টার-নাইল। বাঁহাতি পন্থ ৩৮ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। শেষদিকে শিমরন হেটমায়ার, অক্ষর প্যাটেল ও কাগিসো রাবাদা ভালো করতে না পারায় দিল্লি কোনো রকমে দেড়শ রানের গণ্ডি পার হয়। অপরাজিত আইয়ার ৫০ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৫ রান করেন।

মুম্বাইয়ের হয়ে বল হাতে ট্রেন্ট বোল্ট ৩টি, কোল্টার নাইল ২টি এবং জায়ান্থ যাদব ১টি উইকেট নেন।

দিল্লির দেওয়া ১৫৭ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৮.৪ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।

ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দারুণ করে মুম্বাই। উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ৪.১ ওভারে ৪৫ রান তোলে দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও কুইন্টন ডি কক। তবে ১২ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২০ রান করে মার্কাস স্টোইনিসের বলে বিদায় নেন ডি কক। কিন্তু উইকেটে অবিচল থাকা রোহিত দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সূর্যকুমার যাদবের সঙ্গে ফের ৪৫ রানের পার্টনারশিপ গড়েন।

যাদব ১৭ রানে রান আউট হয়ে বিদায় নিলেও অধিনায়ক রোহিত দলকে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দেন। তুলে নেন দুর্দান্ত এক হাফসেঞ্চুরি। এরপর তৃতীয় উইকেটে তিনি ইশান কিশানের সঙ্গে ৪৭ রানের জুটি গড়েন। রোহিত শেষ পর্যন্ত ৫১ বলে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৬৮ রান করে আনরিখ নরকিয়ার বলে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন।

এরপর কাইরন পোলার্ড ও হার্দিক পান্ডিয়া দ্রুত বিদায় নিলেও কিশান ১৯ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ৩৩ করে দলকে সহজ জয় উপহার দেন।

দিল্লি বোলারদের হয়ে অ্যানরিচ নরকিয়া ২টি, কাগিসো রাবাদা ও স্টোইনিস একটি করে উইকেট নেন।

টুর্নামেন্টের ফাইনালে ম্যাচ সেরা হয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট।

১৪ ম্যাচে ৬.৫৫ ইকোনোমিতে ২০টি উইকেট তুলে নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন জোফরা আর্চার।

এদিকে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন কিংস ইলিভেন পাঞ্জাবের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। তার দল কোয়ালিফাই করতে পারেনি। তবে তিনি ১৪ ম্যাচে পাঁচটি হাফসেঞ্চুরি ও একটি সেঞ্চুরিসহ ৫৫.৮৩ গড় ও ১২৯.২৩ স্ট্রাইক রেটে ৬৭০ রান করেছেন। তার মাথায় আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের অরেঞ্জ ক্যাপ উঠেছে।

আর দিল্লি ক্যাপিটালসের দক্ষিণ আফ্রিকান ফাস্ট বোলার কাগিসো রাবাদা সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করে পারপেল ক্যাপ পরেছেন। তিনি ১৭ ম্যাচে ৮.৩৪ ইকোনোমিতে ও ১৮.২৬ গড়ে ৩০টি উইকেট দখল করেছেন।