ইসরায়েল নয়, কাতার বিশ্বকাপে ফিলিস্তিন নামে নিবন্ধন করতে হবে

আগামী নভেম্বরেই শুরু হতে যাচ্ছে ২০২২ কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ। এ বিশ্বকাপ ইসরায়েলি ফুটবলভক্তরা দেখতে চাইলে, তাদের টিকিট বুকিং দেয়ার ক্ষেত্রে নিজস্ব অঞ্চল হিসেবে ফিলিস্তিনকে বাছাই করতে হবে। টিকিট বুকিং এবং হসপিটালিটি প্যাকেজের জন্য যে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তাতে ইসরায়েলকে আলাদা দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ফিলিস্তিন নামেই ওই অঞ্চলকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ টিকিট কাটাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের পরিবর্তিতে ফিলিস্তিনকে নিজ দেশ হিসেবে বেছে নিতে হবে ইসরায়েলিদের।

কাতার বিশ্বকাপের টিকিট বিক্রি করার জন্য ফিফার কাছ থেকে অনুমতি পেয়েছে ‘উইন্টারহিল হসপিটালিটি’ নামের একটি কোম্পানি। নিজেদের অনলাইন স্টোরে তারা টিকিট বিক্রি শুরু করেছে। কিন্তু বিশ্বকাপে যেতে ইচ্ছুক ইসরায়েলি ফুটবলভক্তরা সম্প্রতি জানতে পেরেছেন, অনলাইন স্টোরে তাদের দেশের নাম নেই। তার বদলে ‘অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল’ নামটি দেখাচ্ছে। মার্কা, আরব নিউজসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত বুধবার প্রথম ইসরায়েলি গণমাধ্যম এই বিষয়টি নিয়ে খবর প্রকাশ করে। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ইসরায়েলিরা। তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলকে ইউরোপীয় অঞ্চলেও তালিকাভুক্ত করা হয়নি। এ খবর প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমত তোলপাড় চলছে বিশ্ব মিডিয়ায়। সমালোচনার মুখে পড়ে ফিফাও। ফিলিস্তিনি নিউজ এজেন্সি ওয়াফা বলেছে, পূর্বে ওই অঞ্চলটি ‘অধিকৃত ফিলিস্তিনি আঞ্চল’ হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিল। বর্তমানে সেটি বদলে ফিলিস্তিন করা হয়েছে। অর্থাৎ ফিলিস্তিনকে দেশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। আরব ফুটবল ভক্তরা বিষয়টিকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।

আরবসহ মুসলিম বিশ্বের ফুটবল ভক্তরা এই ঘটনায় ভীষণ খুশি। তারা এটাকে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের আগ্রাসনের নীরব প্রতিবাদ হিসেবে দেখছেন। একজন টুইট করেছেন, ‘ধন্যবাদ কাতারকে, বিশ্বকাপের অঞ্চল থেকে ইসরায়েলের নাম বাদ দেওয়ার জন্য। কাতার সরকারকে স্যালুট।’ এক লেবানিজ ভক্তও উচ্ছ্বসিত প্রশাংসা করেছেন ফিলিস্তিনকে কোনও আরব দেশের এই সমর্থনের ঘটনায়। তিনি আরব নিউজকে বলেছেন, ‘আসলে ইসরায়েল নামে কোনও কিছুর যে অস্তিত্ব আছে, কাতার সেটাকে স্বীকৃতি দেয় না। এমনকি আরব অঞ্চলের কোনও ইভেন্টেও তাদের অংশগ্রহণ দেখতে নারাজ।’ এর আগে বিশ্বকাপ চলাকালে সমকামিতা ও অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের বিরুদ্ধেও শক্ত অবস্থান নেয় কাতার সরকার। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম প্রধান দেশটি জানায়, সমকামী ফুটবলপ্রেমী অতিথিদের নিরাপত্তা প্রদান করতে পারবে না তারা।