টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

নেদারল্যান্ডকে হারিয়ে সুপার টুয়েলভে শ্রীলঙ্কা

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২২, ১৯:০৪

সাহস ডেস্ক
নেদারল্যান্ডকে হারিয়ে সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করেছে শ্রীলঙ্কা।

মন্থর শুরুর পর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল শ্রীলঙ্কা। তবে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে লড়াকু পুঁজি এনে সে চাপ দূর করেন কুশল মেন্ডিস। বোলিংয়ে হাসারাঙ্গা, তিকশানারাও দেখিয়েছেন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। তবে হতাশার ছাপটা ছিল নেদারল্যান্ডকের মধ্যে। ম্যাচ জিততে নেদারল্যান্ডের দরকার ছিল ১৮ বলে ৪৪ রান, হাতে মাত্র ২ উইকেট। তখনও ব্যাটিংয়ে ছিলেন ওপেনিংয়ে নামা ম্যাক্স ও’ডাউড। এরই মধ্যে ৩৮ রান তুলতে ৩৫ বল খেলে ফেলেন তিনি। তবু শেষ ১৮ বলের কঠিন সমীকরণ মিলিয়ে ফেলার আশা ছিল তার। বোলিং করতে আসা বিনুরা ফার্নান্দোর প্রথম তিন বলেই হাঁকালেন বাউন্ডারি-ছয়, চার, চার। পরের ওভারে মহীশ তিকশানার বলে আরও দুই ছয়। প্রায় নাগালের বাইরে চলে যাওয়া ম্যাচ মুহূর্তেই মুঠোর কাছাকাছি। তবে একা আর কতটা সামাল দেবেন। অপর প্রান্ত থেকে বড় শট না আসায় আগেই থেমে যেতে হয়। অপরাজিত ৫৩ বলে ৭১ রান করেও হারতে হয় ও’ডাউড-এর দলকে। এতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলেভ নিশ্চিত হলো শ্রীলঙ্কার।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) জিলংয়ের কারদিনিয়া ওভালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে নেদারল্যান্ডকে ১৬ রানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। শুরুতে নামিবিয়ার কাছে হেরে শঙ্কায় পড়লেও পরের দুই ম্যাচে টানা জয়ে সুপার টুয়েলভে পৌঁছাল ২০১৪ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। হেরে যাওয়ায় অবশ্য নেদারল্যান্ডের সুপার টুয়েলভের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। দিনের অপর খেলায় সংযুক্ত আরব আমিরাত নামিবিয়াকে হারালে নেদারল্যান্ড উঠে যাবে সুপার টুয়েলভে। প্রথম দুই ম্যাচে টানা জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নেমে ছিল নেদারল্যান্ড। তবে নামিবিয়া ও আরব আমিরাতের বিপক্ষে পাওয়া জয় দুটিতে ব্যবধান ছিল স্বল্প, রানরেটও ছিল কম। বিপরীতে নামিবিয়ার কাছে হেরে টুর্নামেন্ট শুরু করা শ্রীলঙ্কা ২ পয়েন্ট নিয়ে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে নেমে ছিল। আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২ পয়েন্ট পাওয়া একমাত্র জয়টির ব্যবধান বেশি (৭৯ রান) হওয়ায় রানরেট ছিল বেশ ভালো। যে কারণে জিতলেই প্রথম রাউন্ড উতরে যাওয়ার সুযোগ ছিল লঙ্কানদের। কুশল মেন্ডিসের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সুপার টুয়েলভে পৌঁছেছে শ্রীলঙ্কা।

দারুণ ইনিংস খেলেছেন কুশাল মেন্ডিস।

এদিন টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬২ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান করতে সক্ষম হয় নেদারল্যান্ড। রান তাড়ায় বেশিরভাগ সময়ই ম্যাচে ছিল না নেদারল্যান্ডস। চতুর্থ ওভারে তিকশানার বলে ফেরেন বিক্রমজিত সিং (৭)। তিনে নামা বাস ডি লিড শুরুটা পেলেও এগোতে পারেনি। তাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান লাহিরু কুমারা। ১৪ রান করে ফেরেন ডি লিড। এছাড়া আসা-যাওয়ার মিছিলে দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছান আর তিনজন। টম কুপার ১৬ রান, স্কট এ্যাডুয়াড ২১ রান এবং ম্যাচের হাল ধরা ম্যাক্স ও’ডাউড দুর্দান্ত ফিফটিতে করে ৭১ রান। ৫৫ বলে ৬ চার ৩ ছক্কা হাঁকান ও’ডাউড। এ ছাড়া আর কেউ দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেনি। লঙ্কানদের হয়ে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ৪ ওভার করে ২৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। মহীস তিকশানা নিয়েছেন ২টি উইকেট আর লাহুরি কুমারা ও বিনুরা ফার্নান্দো ১টি করে উইকেট নেন।

৭১ রানের ইনিংস খেলেও দলকে জেতাতে পারেননি ও’ডাউড।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর প্রথম থেকেই রান তুলতে হিমশিম খেয়েছেন পাতুম নিশাঙ্কা। ২১ বলে ১৪ রান করে নিশাঙ্কা আউট হওয়ার পর একই সংগ্রাম করতে হয় অন্যদেরও। আসালাঙ্কা ৩১ রান করতে খেলেছেন ৩০ বল। ১৩ বলে ১৯ রান করেন রাজাপাকশে। এ ম্যাচে তিনিই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহক। তবে একপ্রান্ত আগলে রাখা কুশল যেন ভিন্ন উইকেট আর ভিন্ন বোলিংয়ের বিপক্ষে ব্যাট করছিলেন! ২০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হওয়ার আগে ৪৪ বলে ৫ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এটি ছিল তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি। শেষ দিকে হাত খুলে খেলা কুশলের নৈপুণ্যে শেষ ১০ ওভারে ১০২ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। কুশল ছাড়া দলের অন্য ৭ ব্যাটার মিলে তোলেন ৭৯ রান। নেদারল্যান্ডের হয়ে ভান মিকেরেন ও বাস ডি লিড ২টি করে এবং ফ্রিড ক্লাসেন ও ভান ডার গুতেন ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন কুশাল মেন্ডিস।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত