অপ্রতিরোধ্য শাহিন, স্নায়ুক্ষয়ী উত্তেজনায় চ্যাম্পিয়ন লাহোর

প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩, ১৩:২৯

স্পোর্টস ডেস্ক

যেন প্রকৃত টি-টোয়েন্টির রূপ দেখা গেল পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) ফাইনালে। রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তি, স্নায়ুক্ষয়ী উত্তেজনা, চার ছক্কার ধুম- কি ছিল না পিএস‌এল ফাইনালে?

কেবল শাহিন শাহ আফ্রিদির অলরাউন্ড পারফরমেন্সের কাছেই স্নায়ুক্ষয়ী উত্তেজনায় পরাজয় হল মুলতান সুলতান্সের। শাহিন শাহ আফ্রিদি ব্যাট হাতে যেমন বিধ্বংসী ছিলেন, তেমন বল হাতেও ছিলেন দারুণ ছন্দে। মাত্র ১৫ বলে ৪৪ রান করার পর বল হাতে নিয়েছেন একাই চার উইকেট।

মুলতান সুলতান্সও দমে যাবার নয়, চলালো তুমুল লড়াই। জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ২০১ রান করার লক্ষ্যে প্রায় পৌঁছে গিয়েছিল তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পেরে উঠলো না। মাত্র এক রানের দূরত্বে শেষ হয়ে গেল মুলতানের জীবনী শক্তি। ফলে স্নায়ুক্ষয়ী ফাইনালে মাত্র এক রানের জয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো পিএস‌এলের শিরোপা জিতে নিল লাহোর কালান্দার্স।

গতবারের ফাইনালে লাহোর কালান্দার্সের বিরুদ্ধে হারের প্রতিশোধ নেওয়ার দারুন সুযোগ ছিল মুলতান সুলতান্সের সামনে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে উঠলো না। বরং ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে পাকিস্তান সুপার লিগের জয়ের ধারা ধরে রাখলো‌ লাহোর। আফ্রিদিরা টানা ২ বার পিএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়েই মাঠ ছাড়েন।

গতবছর পিএস‌এল ফাইনালে মুলতান সুলতান্সকে ৪২ রানের ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় লাহোর। এবারও পিএসএলের শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হয় দু’দল। মাত্র ১ রানের ব্যবধানে স্নায়ুক্ষয়ী উত্তেজনায় জয় তুলে নিয়ে শিরোপা হাতে তুলে ধরেন আফ্রিদিরা।

প্রসঙ্গত, এবছর পাকিস্তান সুপার লিগের প্রথম ম্যাচে মুলতান সুলতান্সকে ১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে অভিযান শুরু করে লাহোর কালান্দার্স। ফাইনালে সেই মুলতানের বিরুদ্ধেই ১ রানের জয়ে অভিযান শেষ করলো তারা।

ফাইনালে টস জিতে লাহোর কালান্দার্স শুরুতে ব্যাট করতে নামে। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২০০ রান তোলে তারা। ঝড়ো হাফ-সেঞ্চুরি করেন অব্দুল্লা শফিক। তিনি ৮টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪০ বলে ৬৫ রান করে আউট হন। শেষদিকে মাত্র ১৫ বলে ৪৪ রানের ধ্বংসাত্মক ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন শাহিন আফ্রিদি। মারকাটারি ইনিংসে তিনি ২টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন।

এছাড়া ৫টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ১৮ বলে ৩০ রান করেন মির্জা বেগ। ৩৪ বলে ৩৯ রান করেন ফাখর জামান। তিনি ৪টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন। স্যাম বিলিংস ৯ ও সিকন্দর রাজা ১ রান করে আউট হন। খাতা খুলতে পারেননি এহসান হাফিজ। ২ রান করে নট-আউট থাকেন ডেভিড ওয়াইজ।

মুলতানের হয়ে ২৪ রানে ৩টি উইকেট নেন উসামা মীর। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন আনোয়ার আলি, ইসানউল্লাহ ও খুশদিল শাহ। উইকেট পাননি কায়রন পোলার্ড।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে মুলতান সুলতান্স ২০ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১৯৯ রানে আটকে যায়। জয়ের জন্য শেষ বলে চার রান দরকার ছিল মুলতানের। ৩ রান নিয়ে ম্যাচ টাই করার চেষ্টায় রান-আউট হন খুশদিল।

দল হারায় ব্যর্থ হয় রাইলি রুশোর লড়াকু হাফ-সেঞ্চুরি। তিনি ৭টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৩২ বলে ৫২ রান করেন। ২৩ বলে ৩৪ রান করেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তিনি ৫টি চার মারেন। এছাড়া উসমান খান ১৮, কায়রন পোলার্ড ১৯, টিম ডেভিড ২০, খুশদিল শাহ ২৫, আনোয়ার আলি ১ ও আব্বাস আফ্রিদি ১৭ রান করেন।

আফ্রিদি ৪ ওভারে ৫১ রান খরচ করলেও ৪টি উইকেট দখল করেন। ২৬ রানে ২টি উইকেট নেন রশিদ খান। ১টি উইকেট নিয়েছেন ডেভিড ওয়াইজ। লাহোর কালান্দার্স প্রথম দল, যারা পরপর ২ বার পিএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়। এর আগে কোনও দল একবার পাকিস্তান সুপার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের মরশুমে তাদের জয়ের ধারা ধরে রাখতে পারেনি।

সাহস২৪.কম/এমআই

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত