উত্তপ্ত আফগান

হেরাতসহ নয়টি প্রাদেশিক রাজধানী তালেবানের দখলে

প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২১, ০১:৫৪

সাহস ডেস্ক

আফগানিস্তানে একের পর এক ঘাটি গাড়ছে তালেবান বাহিনী। এ পর্যন্ত ছয়দিনে নয়টি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করেছে তারা। দেশটির রাজধানী কাবুল ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহারের মধ্যবর্তী মহাসড়ক বরাবর অবস্থিত গজনি প্রদেশের রাজধানী শহরটির দখল নেওয়ার পর দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম শহর হেরাতের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এ বিদ্রোহী গোষ্ঠী।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, তালেবান যোদ্ধারা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হেরাতের পুলিশ সদর দপ্তর দখল করে নেয়।

বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) কাবুল থেকে মাত্র দেড়শ কিলোমিটার দূরের প্রাদেশিক রাজধানী গজনির দখল নেয় তালেবান। তারপর সন্ধ্যায় সরকারি বাহিনী ও প্রশাসন পিছু হটার পর তৃতীয় বৃহত্তম শহর হেরাতের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এ নিয়ে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে আফগানিস্তানের নয়টি প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিল তারা। তীব্র লড়াই চলছে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কান্দাহারেও। একই দিন ভোর ৪টা পর্যন্ত একটানা লড়াই করে ফজরের নামাজের পর আবার শুরু হয় দখলদারিত্বের এ মহাযজ্ঞ।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা বলেছেন, ৯০ দিনের মধ্যে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে গজনি থেকে উত্তরপূর্ব দিকে প্রায় হাতের নাগালে থাকা রাজধানী কাবুল।

আফগানিস্তানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা একটি বিশ্বস্থ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তীব্র লড়াইয়ের পর গজনির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবানরা। দখল করেছে নগরীর সবগুলো সরকারি সংস্থার সদরদপ্তরগুলো।

আরও বলেন, প্রাদেশিক গভর্নরসহ সব স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কাবুলের দিকে।

গত বুধবার রাতে এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, স্থানীয় হাসপাতালটি গ্রহণ করেছে সশস্ত্র বাহিনীগুলোর বহু সদস্যের মৃতদেহ আর কিছু আহত তালেবানকে।

তালেবান জানিয়েছে, তারা কান্দাহারের প্রাদেশিক কারাগারের দখল নিয়েছে।

এদিকে তালেবানের দখলদারিত্বের মুখে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তানের সরকারকে এককভাবে লড়াইয়ের জন্য ছেড়ে আসার এ সিদ্ধান্তে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত আফগানিস্তানের নয়টি প্রাদেশিক রাজধানীর পতন হয়েছে তালেবানের হাতে। চলতি মাসের ৬ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত ছয়দিনে এ শহরগুলোর দখল নেয় তারা। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির গজনি প্রদেশের রাজধানী শহরটির দখল নেয়ার আগে গত বুধবার (১১ আগস্ট) দখল করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের রাজধানী ফয়জাবাদ শহর। প্রথম দুইদিনেই দখল করেছিলো জারাঞ্জ এবং শেবারগান। গত রবিবার (৮ আগস্ট) মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় তিনটি প্রাদেশিক রাজধানী কুন্দুজ, সার-ই-পুল এবং তালোকান দখল করেছে তালেবান যোদ্ধারা।

পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত দেশটির প্রায় দুই তৃতীয়াংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে তালেবান। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন প্রদেশে থেকে হাজার হাজার পরিবার পালিয়ে নিরাপত্তার খোঁজে জড়ো হচ্ছে কাবুল ও অন্যান্য শহরে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে পুরো দেশ তালেবানদের দখলে যেতে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। এ সঙ্কট থেকে আফগানিস্তানে নিরীহ জনগণের ভোগান্তির দ্রুত সমাধান চাইছেন আন্তর্জাতিক শান্তি প্রত্যাশীরা।

তথ্যসূত্র- রয়টার্স, বিবিসি, এএফপি, দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সাহস২৪.কম/এসটি/এসকে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত