শ্রীলঙ্কা: ৪০ এমপির পদত্যাগে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালো সরকার

প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২২, ২০:০২

সাহস ডেস্ক

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসার জোট পোদুজানা পেরামুনা (এসএলপিপি) পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। কারণ, দেশটির এই ক্ষমতাসীন জোট সরকারের ৪০ জনের বেশি এমপি জোট থেকে বেরিয়ে গেছেন। খবর- বিবিসির।

ক্ষমতাসীন জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া কিছু দলের এমপিরা জানিয়েছেন, ‘তারা এখন পার্লামেন্টে স্বতন্ত্র অবস্থান নেবেন’। এর ফলে প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসার সরকারের পক্ষে এখন কাজ চালানো কঠিন হয়ে পড়তে পারে। যদিও স্বতন্ত্র এমপিরা চাইলে সরকারকে সমর্থন দিতে পারে।

৪০ জনের বেশি এমপির জোট ত্যাগের ফলে অবস্থা এখন কী দাঁড়াবে এটা এখনো স্পষ্ট নয়। তারা সরকারের জোট ছাড়লেও বিরোধী দলের প্রতি সমর্থন এখনো জানাননি। তবে এর ফলে পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে।

মঙ্গলবার সদ্য নিযুক্ত অর্থমন্ত্রী আলি সাবরি ঘোষণা দিয়েছেন যে তিনি পদত্যাগ করছেন। অর্থমন্ত্রী হতে রাজী হওয়ার ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে তিনি সরে দাঁড়ানোর কথা জানালেন।

রাজাপাকসার মন্ত্রিপরিষদ এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছে। তবে প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসা, এবং তার ভাই প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসা এখনো পর্যন্ত পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন।

এর পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট সব বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন একটি জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের জন্য, যেখানে মন্ত্রিসভায় বিরোধী দলও অংশ নিতে পারে। তবে সব বিরোধী দলই এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসার পদত্যাগ দাবি করছে।

এদিকে দেশজুড়ে প্রধান শহরগুলোতে সরকার বিরোধী গণবিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। গত কদিনে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি আরও জোরালো হয়ে উঠেছে। এমনকি কারফিউ অমান্য করেছে বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভ দমনের জন্য শুক্রবার হতে রবিবার পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছিল। এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টের বাসভবনের বাইরে পর্যন্ত সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে।

২০১৯ সালের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন রাজাপাকসে। সে সময় দেশে স্থিতিশীলতা এবং 'দৃঢ় হাতে' দেশ শাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। তবে এই বিক্ষোভের কারণে প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসার জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি এখন বিদ্যুৎ ঘাটতি এবং জ্বালানি সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে। অর্থনীতির বেহাল দশা এবং বৈদেশিক মূদ্রার সঞ্চয় কমে যাওয়ায় শ্রীলংকা এই সংকটে পড়েছে। বৈদেশিক মূদ্রার অভাবে শ্রীলংকা এখন তার জ্বালানি এবং অন্যান্য পণ্য আমদানি করতে পারছে না। জ্বালানি আমদানির খরচ মেটানোর জন্য শ্রীলংকার যে বৈদেশিক মূদ্রা দরকার, সেটি তাদের নেই। ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর এটিকে শ্রীলংকার সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকট বলে মনে করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত