গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি, যে প্রভাব পড়বে পুতিনের উপর

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৩, ১৫:৩৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। ইউক্রেনে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী করে শুক্রবার (১৭ মার্চ) তার বিরুদ্ধে এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে সংস্থাটি। এদিকে পুতিনের বিরুদ্ধে জারি করা এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ‘অর্থহীন’ বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া। অন্যদিকে পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা যৌক্তিক বলে দাবি করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে রোম সংস্থাটির এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পুতিনের ওপর আদৌ কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা, অবশেষে এর ফল কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়ে থাকছে জল্পনা কল্পনা।

এদিকে ইউক্রেনে সহিংসতার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সিদ্ধান্তগুলো আমাদের দেশের জন্য কোনো অর্থ বহন করে না। রাশিয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম আইনের পক্ষে নয় এবং এর অধীনে কোনো বাধ্যবাধকতা রাশিয়ার নেই।’

অন্যদিকে পুতিনের বিরুদ্ধে জারি করা এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা যৌক্তিক বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনে সরাসরি যুদ্ধাপরাধ ঘটিয়েছেন, সে জন্য এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আন্তর্জাতিকভাবে শুধু স্বীকৃতি দিল না, শক্তিশালী একটি পয়েন্ট তৈরি হলো।’

তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও এটি কার্যকরের সম্ভাবনা এখন নেই। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ায় বর্তমানে পুতিনের একচ্ছত্র আধিপত্য চলছে। এর অর্থ, আইসিসির হাতে পুতিনকে তুলে দেবে না মস্কো। তিনি যতক্ষণ পর্যন্ত রাশিয়ায় আছেন ততক্ষণ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তার কিছুই হবে না।

কিন্তু তিনি যদি রাশিয়া ছাড়েন, তাহলে তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। এ কারণে এখন পুতিনকে তার রাষ্ট্রীয় সফরগুলোতে কিছুটা বিধিনিষেধ আনতে হবে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থাকায় এবং যেসব দেশে তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে সেসব দেশে যাবেন না পুতিন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার শুধুমাত্র এই একটি প্রভাবই পড়বে রুশ প্রেসিডেন্টের ওপর।

২০০৯ সালের দক্ষিণ সুদানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। পরোয়ানা সত্ত্বেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছেন তিনি। কিন্তু কূটনৈতিক বিষয়টি বিবেচনা করে কোনো দেশ তাকে গ্রেপ্তার করেনি। কোনো দেশ পুতিনকে গ্রেপ্তার করে আইসিসির হাতে তুলে দেবে এমন কোনো সম্ভাবনাও নেই।

২০০০ সালে রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিল রাশিয়া। তবে, দেশটি আইসিসির সদস্য হয়নি। এমনকি, ২০১৬ সালে রোম সংবিধি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয় তারা। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই দেশটিতে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। কিন্তু এসব অভিযোগ বরাবরই জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করে এসেছে মস্কো।

সাহস২৪.কম/এআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত