আজ বিশ্ব দুগ্ধ দিবস

'টেকসই দুগ্ধ শিল্প : সুস্থ মানুষ, সবুজ পৃথিবী’

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ১১:৩৮

সম্পাদনা : এস এম মুকুল
দুধের মধ্যে রয়েছে ফোলেট ও ম্যাগনেশিয়াম, যা আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে এবং রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধশক্তি গড়ে তোলে

শরীর সুস্থ এবং কর্মক্ষম রাখতে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার অপরিহার্য।   এই অপরিহার্য খাদ্যদ্রব্যের খাতসম্পর্কিত কার্যক্রমে নজর বাড়াতে ১ জুন পালন করা হয় ‘বিশ্ব দুগ্ধ দিবস’। 

বৈশ্বিক খাদ্য হিসেবে দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্যের গুরুত্ব তুলে ধরার লক্ষ্যে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ঘোষিত একটি আন্তর্জাতিক দিবস এটি। ২০০১ সাল থেকে জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) উদ্যোগে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। 

এবারের বিশ্ব দুগ্ধ দিবসের প্রতিপাদ্য—এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘টেকসই দুগ্ধ শিল্প : সুস্থ মানুষ, সবুজ পৃথিবী’।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রতি বছর দেশব্যাপী দিবসটি উদযাপন করে। এ উপলক্ষে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) সহযোগিতায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন ও ডেইরি আইকন সেলিব্রেশন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। 

অনুষ্ঠানে চারটি ক্যাটাগরিতে দেশের দুগ্ধ খাতের ৪১ জন সফল খামারি ও উদ্যোক্তাকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।

 নিজে সুস্থ থাকার পাশাপাশি পরবর্তী প্রজন্মকেও শক্তি, বুদ্ধি ও সুস্থতার সঙ্গে গড়ে তুলতে সামর্থ্য অনুযায়ী নিয়মিত দুধ পান করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে দুধের মূল উৎস গরু। ৯০ শতাংশ দুধ আসে গরু থেকে, আট শতাংশ আসে ছাগল থেকে এবং দুই শতাংশ আসে মহিষ থেকে। গত দশ বছরে দেশে দুধ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় পাঁচগুণ। মাথাপিছু দৈনিক ২৫০ মিলিলিটার দুধের চাহিদার বিপরীতে বর্তমানে ১৯০ মিলিলিটারের কিছু কম–বেশি পাওয়া যাচ্ছে।

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার প্রোটিনের একটি ভালো উৎস। স্বল্প ফ্যাটযুক্ত, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ দুগ্ধজাত পণ্যগুলো সাধারণত রক্তচাপ কমায় এবং ২০০-৩০০ মিলি/দিন দুধ গ্রহণে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ে না বলে সম্প্রতি গবেষণায় (ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন রিসার্চ ২০১৬) পাওয়া যায়। দুগ্ধপ্রোটিন, যেমন কেসিন ক্ষুদ্রান্ত্রে ক্যালসিয়াম ও ফসফেট শোষণকে সহজ করে এবং এটি বায়ো-অ্যাকটিভ পেপটাইড উৎপাদনের প্রধান উপাদান। দুগ্ধজাত পেপটাইডগুলো মানুষের ক্ষুদ্রান্ত্রে দুধের প্রোটিনের পরিপাক থেকে উদ্ভূত হয়ে অক্ষতভাবে শোষিত হয়।

দুধের সবচেয়ে উপকারী দিক হলো এর ক্যালসিয়াম। মানুষের হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্যালসিয়াম অপরিহার্য। এটি ভিটামিন ডির ভালো একটি উৎস। ভিটামিন ডি হাড়, দাঁত, নখ, চুল ও ত্বকে পুষ্টি জোগায়। রোগ প্রতিরোধক শক্তি বৃদ্ধি করে। আরও আছে ভিটামিন এ, যা সব বয়সের মানুষের চোখের জন্য উপকারী। 

দুধের মধ্যে রয়েছে ফোলেট ও ম্যাগনেশিয়াম, যা আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে এবং প্রতিরোধশক্তি গড়ে তোলে রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে ক্রমবর্ধমান জিডিপিতে প্রাণিসম্পদের অবদান ৩ দশমিক ২১ শতাংশ। দুধ থেকে বিভিন্ন উপায়ে আধুনিক প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে নানা ধরনের দুগ্ধজাত দ্রব্য উৎপাদন করা হচ্ছে। যার সাথে বিশাল শ্রমশক্তি জড়িত। দেশের মোট কর্মসংস্থানের প্রত্যক্ষভাবে ২১ শতাংশ এবং পরোক্ষভাবে ৫০ শতাংশ প্রাণিসম্পদের উপর নির্ভরশীল।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত