খাদিজার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে বদরুলের সহযোগীরা

প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০১৬, ১৫:২২

সিলেটে খাদিজার ওপর হামলাকারী বদরুল আলম ও তার সহযোগিরা থেমে নেই। এই পাশবিক আক্রমণের পরেও তারা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছে খাদিজার নামে মিথ্যে কথা প্রচার করে বদরুলের পক্ষে সমর্থন আদায়ে। 

ছাত্রলীগ নেতা বদরুল পুলিশের হাতে আটক থাকলেও সহযোগিদের দিয়ে সে ফটোশপের মাধ্যমে অন্য এক মেয়ের ছবিতে খাদিজার মুখ বসিয়ে  তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল বলে প্রমাণ করতে চাইছে।

ধারালো চাপাতির কোপে মারাত্মক আহত খাদিজা বেগম এখনো স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা বলছেন, সুস্থ হতে তার এখনো অনেক সময় লাগবে।

অন্যদিকে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে বদরুল খাদিজার ওপর হামলার কথা স্বীকার করেছে। এবং বদরুলের প্রেমের প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় বদরুল খাদিজাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছে বলে স্বীকাররোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। কিন্তু বদরুলের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়ের ছবিতে এডিট করে খাদিজার মুখ বসিয়ে দিয়ে তারা প্রমাণ করতে চাচ্ছে যে খাদিজা বদরুলের সাথে প্রতারণা করেছে। 

আবু নাসের নামে বদরুলের এক সহযোগী তার ফেসবুকে অন্য মেয়ের ছবিতে এডিট করে খাদিজার মুখ বসিয়ে তা প্রচার করে 
 

 

 

বদরুলের আরেক সহযোগী মিনহাজ রুবেল একইভাবে ফেসবুকে ভুল তথ্য প্রচার করে খাদিজাকে কোপানোর বিষয়ে বদরুলকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করছে

https://www.facebook.com/minhaj.rubel.5?fref=ufi&pnref=story

 

এ বিষয়ে বুধবার খাদিজার বাবা মাসুক মিয়া বলেন, ''দেশের মানুষের দোয়া আর আল্লাহ্‌র রহমতে বলতে গেলে দ্বিতীয়বার জন্ম পেয়েছে আমার মেয়ে খাদিজা। অথচ তার ছবি ব্যবহার করে অসৎ খেলায় মেতেছে বদরুল ও তার সহযোগিরা। তারা প্রযুক্তির অপব্যবহার করে আমাদের ঘায়েল করার চেষ্টা করছে।

প্রমাণ করতে চাইছে যে, বদরুলের সঙ্গে খাদিজার সম্পর্ক রয়েছে। আর খাদিজা প্রতারণা করায় বদরুল এসব করেছে। কিন্তু কেবল মানুষের বদরুলের সহযোগীদের অপপ্রচারের বিষয়ে জানতে আমি বাধ্য হয়ে আমার মেয়েকে এই অবস্থার মধ্যেও জিজ্ঞাসা করেছি বদরুলের সাথে কখনো তার কোন সম্পর্ক ছিলো কিনা। খাদিজা বলেছে বদরুল তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলো আর উত্যাক্ত করতো। খাদিজা সেই প্রস্তাবে কখনো রাজী হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ''খাদিজা নবম শ্রেণিতে পড়াকালে বদরুল খাদিজাকে রাস্তায় উত্যাক্ত করলে সে সময় গ্রামবাসী বদরুলকে গণধোলাই দিয়েছিলেন। এর পরও সে সুযোগ পেলেই খাদিজাকে উত্ত্যক্ত করতো। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর একদিন খাদিজা বাসায় এসে বিষয়টি সবার সাথে শেয়ার করে। এ জন্য এর পর থেকে প্রতিদিন তার সঙ্গে চাচা আব্দুল কুদ্দুস  কলেজে যেতেন। যে দিন ঘটনা ঘটেছিল, সেদিনও চাচা তাকে কলেজে পৌঁছে দিয়েছিলেন। কিন্তু চাচার একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকায় তাকে আনতে যেতে পারেননি। খাদিজার বান্ধবির সাথে আসতে বলেছিলেন।’  

খাদিজার বাবা কান্না জড়ানো কন্ঠে আরও বলেন, ''বদরুল নিজেই যেখানে আদালতে জবানবন্দীতে বলেছে যে বদরুলের প্রেমের প্রস্তাবে খাদিজা রাজী হয়নি বলেই সে খাদিজাকে কুপিয়েছে। এরপর তো আর কিছু বলার থাকেনা। তবে আমার মেয়ের নামে কারা এসব মিথ্যে কথা প্রচার করছে? আমি এদের অপপ্রচার বন্ধ করতে পুলিশ র‍্যাবসহ সবার সহযোগিতা চাই।''  

বদরুলের সহযোগীদের ছবি এডিট করে ভুয়া ছবি তৈরি করার আগের প্রকৃত ছবিটি ভালোভাবে দেখলেই বোঝা যায় অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে বদরুলের তোলা ছবিতে শুধু খাদিজার মুখটি বসিয়ে দেওয়া হয়েছে ফটোশপের মাধ্যমে।

সারা দেশের মানুষ খাদিজার জন্য দোয়া করছেন যেন সে তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে ওঠে এবং সবাই বদরুলের শাস্তির দাবি জানাচ্ছে। অথচ এর মধ্যে কিছু জঘন্য প্রবৃত্তির মানুষ খাদিজার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

এদিকে খাদিজা এখন আগের চেয়ে অনেক সুস্থ্য। আগে সে শিখিয়ে দিলে একটি বা দুটি শব্দ বলতে পারতো। এখন সে মোটামুটি কথা বলতে পারে। তবে অস্পষ্ট। কথা বলতে কষ্টও হচ্ছে। তবে সবাইকে সে চিনতে পারছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত