কক্সবাজারে চুয়েটের তিনদিন ব্যাপী আর্ন্তজাতিক সম্মেলন চলছে

প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৫:১৭

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এজন্য শিক্ষা-গবেষণার গুণগত মান রক্ষায় আমরা সার্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে আমরা নিজেদের সমস্যা সমাধানের পাশপাশি বিদেশেও নতুন জ্ঞান ও নতুন প্রযুক্তি রপ্তানি করতে চাই। 

তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে টেকসই উন্নয়ন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জিং কাজ। বৈশ্বিক সমস্যা বিবেচনায় এনে আমাদের টেকসই উন্নয়ন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। ব্যবসা, পরিবেশ এবং জনগণের মধ্যে জয়-জয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে। টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে ঝুঁকি কমাতে হবে, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সামর্থ্য বাড়াতে হবে। গ্রিন প্রোডাক্ট ব্যবহার করে পরিবেশের ক্ষতি কমাতে হবে। সৃষ্টিশীল উদ্ভাবনের মাধ্যমে টেকসই ভবিষ্যত গড়তে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের একটি হোটেলে আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন এডভান্সেস ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং’ শীর্ষক তৃতীয় আর্ন্তজাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন শেষ হবে আগামি ২৩ ডিসেম্বর। এতে অংশ গ্রহণ করেছেন দেশিবিদেশি ১৪৮ জন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার।

শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ আরো বলেন, বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্বে রূপকল্প-২০২১ অনুযায়ী মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের সফল মিশন চলছে। পদ্মা সেতুর মত অনেক বড় বড় প্রজেক্ট এখন নিজস্ব অর্থায়নেই কেবল নয় দেশের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানি ইস্যু, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত নগরায়নসহ অনেক সমস্যা বিরাজমান। প্রতিদিনকার সমস্যা এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সমূহের সৃষ্টিশীল সমাধানে প্রকৌশলীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্ববহ। বৈশ্বিক উষ্ণতাজনিত বিপদ আমরা এড়াতে পারি না। আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে আর্থিকভাবে আরো সাশ্রয়ী করতে হবে। এজন্য সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। আইডিয়া এবং জ্ঞান বিনিময়, সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের ধারণার মাধ্যমে বিশ্বের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। এই সম্মেলন এসব বিষয়ে একটি যোগ্য প্লাটফরমে পরিণত হতে পারে। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম এবং দি ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ-এর সভাপতি প্রকৌশলী মো. কবির আহমদ ভূঞাঁ। 

অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, পদ্মাসেতু, কর্ণফুলী টানেল, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ দেশের যেসব যুগান্তকারী মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হচ্ছে সেখানে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। আগামী দিনে বাংলাদেশকে তারা আরো এগিয়ে নেবে। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের প্রাচীন ও গৌরবময় ইতিহাস আছে। উন্নত বাংলাদেশ নির্মাণেও তারা নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকবে বলে আমি আশাবাদী।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, এ সম্মেলন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে গবেষণা ও ব্যবহারিক প্রয়োগকারীদের মাঝে একটি সেতুবন্ধন রচনা করেছে। এটি ৩য় বারের মত সফলভাবে আয়োজনে চুয়েট সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুপ্রাণিত করেছে। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ও সম্মেলনের  সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান ভূইয়াঁ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ভারতের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বম্বে-এর অধ্যাপক ড. দীপঙ্কর চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের সদস্য সচিব ও চুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফারাজানা রহমান জুথীঁ। স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের পক্ষে বক্তব্য রাখেন কেএসআরএম স্টিল প্ল্যান্ট লিমিটেড-এর ডিজিএম (মার্কেটিং এন্ড সেলস) আশরাফ উদ্দিন এবং কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপক (কোয়ালিটি এস্যুরেন্স) রিয়াজ হোসেন।

প্রসঙ্গত, চুয়েট-এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে এর আগে উক্ত বিষয়ে ২০১২ ও ২০১৪ সালে দুটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত