বেড়ায় ব্লক ধস-চুরি, হুমকির মুখে কোটি টাকার বাঁধ

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:২০

সাহস ডেস্ক

পাবনার বেড়া উপজেলায় যমুনা নদীর ভাঙন স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রতিরক্ষা বাঁধ এখন হুমকির মুখে। চলতি শুষ্ক মৌসুমে এর তিন কিলোমিটার এলাকার সিসি ব্লক ধস ও চুরির ফলে বাঁধটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে যমুনা নদী তীরবর্তী পাঁচটি গ্রামে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে বাঁধটির এই দুরবস্থা। অতি দ্রুত বাঁধটির বিভিন্ন পয়েন্টে সংস্কার করা না হলে মারাত্মক ভাঙন দেখা দিতে পারে।

এ বিষয়ে বেড়ার কৈটলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসহান হাবিব জানান, প্রতিরক্ষা বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে জরিপ করা হয়। চলতি অর্থবছরে টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। আগামী অর্থবছরে টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে সংস্কার কাজ করা হবে। এলাকার মানুষের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টি ছাড়া ব্লক-জিও ব্যাগ চুরি ও প্রতিরক্ষা বাঁধের ক্ষতিসাধন ঠেকানো সম্ভব নয় বলে তিনি জানান।

বেড়া পাউবো সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেড়া উপজেলার মোহনগঞ্জ এলাকায় তিনটি পয়েন্টে প্রতিরক্ষা বাঁধের আট ফুট দৈর্ঘের টপ দুই থেকে তিন ফুট করে ডেবে গেছে। সিসি ব্লক আলগা হয়ে পড়েছে। মোহনগঞ্জের ভাটিতে মালদাহপাড়ায় দুটি পয়েন্টে ১০ ফুট দৈর্ঘের পাঁচ থেকে ছয় ফুট পর্যন্ত বাঁধের টপ ডেবে গেছে। ফলে আগামী বর্ষা মৌসুমে প্রচণ্ড ঘূর্ণায়মান স্রোতের টানে ও ঢেউয়ের আঘাতে এসব স্থানে মারাত্মক ভাঙন দেখা দেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

পাউবো সূত্র জানায়, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনা-মেঘনা রিভার ইরোশন মিটিগেশন প্রকল্পের আওতায় যমুনা নদীর সবচেয়ে বেশি ভাঙন প্রবণ পাবনার বেড়া উপজেলার মোহনগঞ্জ থেকে রাকশা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার এলাকাব্যাপী স্থায়ী ভাঙন রোধ প্রকল্পের কাজ ২০০৪ সালে শুরু হয়ে ২০০৮ সালে শেষ হয়। প্রায় ১৩ কিলোমিটার যমুনা নদীর পশ্চিম পাড়ে (ডানতীর) প্রতিরক্ষা বাঁধটি তৈরি করা হয়।

প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের ফলে মোহনগঞ্জ থেকে রাকশা পর্যন্ত যমুনা নদীর ভাঙন বন্ধ হয়ে যায়। নদীর পশ্চিম পাড়ে চর জেগে উঠতে থাকে। এই কাজে প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ না করে গ্লোবাল পজিশনিং (জিপিএস) পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।

তবে রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে আবারও ভাঙনের মুখে পড়তে পারে নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

সাহস২৪.কম/জুয়েনা/আল মনসুর 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত