আ.লীগের কাছে দেশের অধিকার সবচেয়ে বড়: শেখ হাসিনা

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০১৮, ১৮:২০

সাহস ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের কাছে দেশ বড়, দেশের অধিকার সবচেয়ে বড়। আজ শনিবার (২১ জুলাই) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ও অর্জনের স্বীকৃতি তাকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের সাথে গঙ্গা চুক্তি করেছে আওয়ামী লীগ। জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া কেউই এ চুক্তির বিষয়ে উদ্যোগ নেয়নি। একজন প্রধানমন্ত্রী যিনি দিল্লিতে গিয়ে গঙ্গা চুক্তির কথা ভুলে গিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, তারা মুখে ভারতবিরোধী কথা বলে আর ভেতরে ভেতরে ভারতের তোষামোদ করে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। কিন্তু জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বিচার বন্ধ করে দিয়ে তাদের গাড়িতে দেশের পতাকা তুলে দিয়েছিল।

তিনি বলেন, জাতির পিতার খুনী এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে দেশ আজ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে।

আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, বাঙালি যখনই কোনো কিছু পেতে গেছে বাধা এসেছে। রক্ত দিয়ে বাঙালি তাদের দাবি আদায় করেছে। আর সব আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা।

৯৬ সালের নির্বাচন সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসে বিএনপি। দেড় মাসের মধ্যে বাংলাদেশের জনগণ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পদত্যাগে বাধ্য করেছিল। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে লুটপাট, বোমাবাজী করেছিল। তারা দেশের কোনো উন্নয়ন করতে পারেনি।

তিনি আরো বলেন, ১৩, ১৪, ১৫ সালে অগ্নি সন্ত্রাস, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে বিএনপি। তারা নির্বাচন প্রতিহত করতে চেয়েছিল। নির্বাচন প্রতিহত করলে অনির্বাচিতরা ক্ষমতায় আসতো।

তিনি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, তারা নির্বাচন করে আমাদের ক্ষমতায় এনেছে। তাদের নির্বাচন প্রতিহতের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিল বলে বাংলাদেশের মানুষ কথা বলার অধিকার ফিরে পেয়েছে। স্বাধীনতা পেয়েছে, গণতন্ত্র পেয়েছে। বাংলাদেশে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। তাহলে নৌকা ঠেকাবেন কেন? রাজাকারদের ক্ষমতায় আনতে নৌকা ঠেকাবেন? যারা দেশের নাগরিক, গণতান্ত্রিক ও ভোটাধিকার ও উন্নয়নে বিশ্বাস করে না তারাই নৌকা ঠেকাতে চায়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) নাকি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। কোথা থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে? আজ জনগণের ভোটাধিকার জনগণের হাতে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌকা থাকলেই দেশের মানুষের উন্নয়ন হয়। আজ বাংলাদেশ বিশ্বের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত। স্বাধীনতার পর ২১ বছর দেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। এখন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি মুখে ভারত বিরোধিতা করলেও ভেতরে ভেতরে ভারতের তোসামোদি করে। এমনকি নিজের দাবির কথাটা বলতেও ভুলে যায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটি ভুলে না। কারণ আওয়ামী লীগের কাছে দেশ বড়, দেশের মানুষ বড়, মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন বড়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি দেশকে জঙ্গিবাদের আস্তানা বানিয়ে গেছে। আমরা সেখান থেকে দেশকে রক্ষা করেছি। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যহত আছে। মাদক নির্মূলে কাজ করছি। যে মাদকের কারণে পরিবার, মেধাবী শিক্ষার্থীরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সেই মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।’

এর আগে বেলা সাড়ে ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছান শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফলভাবে উৎক্ষেপণ, আমেরিকা ভিত্তিক এনজিও গ্লোবাল সামিট অব উইমেন থেকে গ্লোবাল উইমেনস লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড এবং ভারতের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি. লিট ডিগ্রি অর্জনসহ সরকারের নানা কৃতিত্বের জন্য তাকে এই সংবর্ধনা দেয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠান উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে নানারকমভাবে সুসজ্জিত করা হয়েছে। ইংরেজি ‘এল’ অক্ষরের মতো বিশাল আকৃতির মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রবেশপথে বসানো হয়েছে অসংখ্য তোরণ।

রাজধানীর মৎস্যভবনের সামনে সংবর্ধনাস্থলের সামনে একটি বিশাল গেট বসানো হয়েছে। এছাড়া মৎস্যভবন থেকে শিশুপার্ক এলাকা পর্যন্ত ৪০টি রঙিন গেট স্থাপন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন-গণভবন থেকে সংবর্ধনাস্থল পর্যন্ত শহরের সড়কগুলোকে ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত