ঢাকা শহরের খাল উদ্ধার করে এলিভেটেড সড়ক করার পরিকল্পনা

প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০১৮, ১৭:৫৯

সাহস ডেস্ক

ঢাকা শহরের সব বক্স কালভার্ট ভেঙে খালগুলো উদ্ধার করে সেগুলোর ওপর এলিভেটেড ওয়ে নির্মাণ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের তো সময় শেষ, আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন। যদি আগামীতে আসতে পারি, আমার একটা টার্গেট বা লক্ষ্য থাকবে – প্রত্যেকটা বক্স কালভার্ট ভেঙে ফেলে দেবো আমি। আশা করি পর্যাপ্ত টাকা পয়সা হবে আমাদের।

রবিবার (১৯ আগস্ট) সকালে রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁওয়ে ঢাকা ওয়াসার ‘দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প’ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ওই বক্স কালভার্টগুলোকে খালে উন্মুক্ত করে দেবো। আর খালের ওপর দিয়ে এলিভেটেড রাস্তা করে দেবো। রাস্তা প্রয়োজন আছে আমার, কিন্তু রাস্তাগুলো আমি যদি খালের ওপর করে ফেলি তাহলে সমস্যা থাকলো না। রাস্তায়ও থাকলো, খালও থাকলো। আবার পয়ঃনিষ্কাশন, পানির সরবরাহ ব্যবস্থাও ভালো হলো।

রাজধানীর বিভিন্ন খাল ও জলাধার বন্ধ হওয়ার ইতিহাস তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মতিঝিলে বিশাল ঝিল ছিলো, সেটা বন্ধ করে দিলো আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর। কতোগুলো খাল ছিলো, ধোলাই খাল, শান্তিনগর খাল, সেগুনবাগিচা খাল, পান্থপথ খালসহ অগণিত খালে ভরা ছিলো এই শহরটা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের চারদিকে পাঁচটি নদী- বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, বালু নদী, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা। নদী দিয়ে ঘেরা ঢাকা শহর। ঢাকা শহরের ভেতর খালগুলো ছিলো শিরা-উপশিরার মতো। সেখানে আমরা দেখলাম সেগুনবাগিছা খাল সেখানে বক্স কালভার্ট করা হলো, আজকে পান্থপথ সেটা কিন্তু খাল। সেখানেও বক্স কালভার্ট, শান্তিনগর খাল সেটাও বক্স কালভার্ট। আর তার ফলে জলাবদ্ধতা, নানা সমস্যা।’

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা যখন নতুন নতুন খাল খনন করে দিচ্ছি, সেটাও কিন্তু অনেক বাধা অতিক্রম করে করা হচ্ছে। বাধা আসবে, কিন্তু বাধা অতিক্রম করে আমাদের কাজটা করতে হবে।

বুড়িগঙ্গা নদীকে দূষণমুক্ত করতে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বুড়িগঙ্গা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়, সেখান থেকে প্রচুর ময়লা বের করা হয়েছে। তারপরও এখন সেভাবে (দূষণমুক্ত) হয়নি। ওখানে সুয়ারেজ সিস্টেম তৈরি করতে হবে। সেখানে নানা ধরনের বর্জ্য আছে। কিছু হচ্ছে বসতবাড়ির বর্জ্য, কিছু আছে শিল্প বর্জ্য। কাজেই সেখানে দুই রকমের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরি করা দরকার। 

ঢাকার চারপাশের নদীগুলোতে পানি প্রবাহ বাড়িয়ে দূষণমুক্ত করতে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যমুনা নদী থেকে ড্রেজিং করে, ধলেশ্বরী নদী ড্রেজিং করে, তুরাগ নদী হয়ে বুড়িগঙ্গা নদী পর্যন্ত ড্রেজিং করে দিতে পারি, যে প্রকল্পের কাজ আমরা শুরু করেছিলাম। মাঝখানে আবার একটু বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আবার শুরু করেছি। এভাবে যদি আমরা পানির ধারাটা অব্যহত রাখতে পারি, তাহলে কিন্তু এই বুড়িগঙ্গা নদীতে আর কোনো রকম দূষণ থাকবে না। পাশাপাশি আমাদের বালু নদী সেটাও ড্রেজিং করতে হবে। যেন ওই নদীতে পানির ধারাটা অব্যহত থাকে।

স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান,  ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক  তাকসিম এ খান, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুয়ো।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত