বিএনপিকে আবারো সন্ত্রাসী সংগঠন বললো কানাডার ফেডারেল কোর্ট

প্রকাশ : ২৪ মে ২০১৭, ১৭:৪২

সাহস ডেস্ক

কানাডার ফেডারেল কোর্ট আবারো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) -কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করেছে। ফেডারেল কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ চেয়ে করা আবেদনও নাকচ করে দিয়েছেন আদালতের বিচারক।

এর ফলে বিএনপির ব্যাপারে কানাডার ফেডারেল কোর্টের দু’জন বিচারকের মন্তব্যের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাওয়ার সুযোগও বন্ধ হয়ে গেছে।

গত ১২ মে ফেডারেল কোর্টের বিচারকের দেওয়া এই রায় মঙ্গলবার (২৩ মে) লিখিতভাবে প্রকাশ হয়েছে বলে কানাডাভিত্তিক অনলাইন পোর্টাল নতুনদেশ ডটকম এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, জাতীয়তাবাদী যুবদল থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির জয়েন্ট সেক্রেটারির দায়িত্ব পাওয়া একজন নেতার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন সংক্রান্ত জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন নিষ্পত্তি করতে গিয়ে বিচারক জে ফদারগিল এই মন্তব্য করেন।

এর আগে বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবি দলের একজন কর্মীর রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদনে ফেডারেল কোর্টের বিচারক জাস্টিস ব্রাউন বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। এবার একই কোর্টের আরেক বিচারক একই ধরনের মন্তব্য করলেন।

বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত লিখিত রায়ে তার নাম প্রকাশ না করে ‘এস এ’ আদ্যক্ষরে বর্ণনা করতে নির্দেশ দেন।

‘কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন’- এই তথ্য প্রকাশ পেলে বাংলাদেশে তার জীবন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে বলে উল্লেখ করে তিনি আদালতের কাছে তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানালে আদালত তা গ্রহণ করেন।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, ‘এস এ’ আদ্যক্ষরের ব্যক্তি ২০০৪ সালে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র যুব শাখা জাতীয়তাবাদী যুবদলে যোগ দেয়। ২০১২ সালে তিনি বিএনপির নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে তিনি কানাডায় এসে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন।

২০১৬ সালের আগস্ট মাসে ইমিগ্রেশন ডিভিশন তার আবেদনের শুনানী করে ওই দিনই সিদ্ধান্ত জানায়। ‘এস এ’ নিজেকে বিএনপি নেতা হিসেবে দাবি করেছেন উল্লেখ করে ইমিগ্রেশন ডিভিশন তাকে কানাডায় প্রবেশের অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করে। 

ইমিগ্রেশন ডিভিশনের সিদ্ধান্তে বলা হয়, বিএনপি সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত আছে, সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত ছিলো, সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত হতে পারে- এটা বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে। কাজেই বিএনপির সদস্য হিসেবে ‘এস এ’ ইমিগ্রেশন ও রিফিউজি প্রোটেকশন অ্যাক্ট-এর ৩৪ (১) (এফ) ধারা মোতাবেক কানাডায় প্রবেশের অযোগ্য।

ইমিগ্রেশন ডিভিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ফেডারেল কোর্টে জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন করেন ‘এস এ’। ফেডারেল কোর্টের বিচারক জে, ফদারগিল আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি করেন। একই সঙ্গে ফেডারেল কোর্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগের আবেদনটিও তিনি নাকচ করে দেন।

রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করতে গিয়ে বিচারক বলেন, ইমিগ্রেশন ডিভিশনের পর্যালোচনায় আমি কোনো ভুল খুঁজে পাইনি। কানাডার আইনে সন্ত্রাসের বিস্তৃত যে সংজ্ঞা দেয়া আছে তার বিবেচনায়, বিএনপির হরতাল ডাকার উদ্দেশ্য এবং ইচ্ছা, হরতালে যে সন্ত্রাস এবং স্বাভাবিক জীবনের বিঘ্ন ঘটেছে এবং এই কাজের (হরতালের) ফলে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে বিএনপির সচেতনতা বিবেচনায় নিয়ে ইমিগ্রেশন ডিভিশন যুক্তিসঙ্গতভাবেই উপসংহারে পৌঁছেছেন যে বিএনপি হচ্ছে একটি সংগঠন, যেটি সন্ত্রাসে লিপ্ত ছিলো, আছে বা সন্ত্রাসে লিপ্ত হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত