বাংলাদেশে ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করে দিচ্ছে গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন

প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০১৮, ১২:০৬

সাহস ডেস্ক

ওষুধ খাতে বিশ্বের অন্যতম বড় কোম্পানি গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশে তাদের দীর্ঘদিনের ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন কার্যক্রম বন্ধ করে দিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে) বাংলাদেশ লিমিটেডের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বাণিজ্যিক ঝুঁকিতে থাকা তাদের ফার্মাসিউটিক্যাল বিজনেস ইউনিটের উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধের প্রস্তাব করেছে। তবে জিএসকে বাংলাদেশ তাদের কনজিউমার হেলথকেয়ার ব্যবসা চালিয়ে যাবে এবং ফার্মাসিউটিক্যাল ব্যবসা বন্ধের কোনো প্রভাব তাতে পড়বে না।

গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন তাদের ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিটের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিভিন্ন ওষুধ ও ভ্যাকসিন উৎপাদন ও বিক্রি করে আসছিল। আর তাদের কনজিউমার হেলথকেয়ার বিক্রি করছে হরলিকস, মালটোভা, বুস্ট, ভিভা, গ্ল্যাক্সোজ-ডি, সেনসোডাইন টুথপেস্ট ও হরলিকস বিস্কুটের মত পণ্য বিক্রি করছে বাংলাদেশে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন ১৯৭৪ সাল থেকে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের কারখানায় উৎপাদন চালিয়ে আসছিল । সেখানে উৎপাদিত ভ্যাকসিন ইউনিসেফের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরে। কারখানা বন্ধ হলেও বাংলাদেশে সেসব ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে জিএসকে।

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকায় জিএসকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি সভায় ফার্মাসিউটিক্যাল বিজনেস ইউনিট বন্ধের ঘোষণা আসার পর ফৌজদারহাটে বিক্ষোভ করেছে তাদের কারখানার শ্রমিক কর্মচারীরা।

জিএসকে এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি মো. ইলিয়াস বলেন, ফৌজদারহাটের কারখানায় পাঁচশর মত স্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করে আসছিলেন। সারাদেশে রয়েছেন আরও পাঁচশ স্থায়ী বিক্রয় ও বিপণনকর্মী। এছাড়া প্রায় পাঁচশ অস্থায়ী কর্মচারী রয়েছেন এ প্রতিষ্ঠানের অধীনে।

তিনি বলেন, জিএসকের দক্ষিণ এশিয়ার রিজিওনাল হেড অব সাপ্লাই চেন রাজু কৃষ্ণ স্বামীর কাছ থেকে বৃহস্পতিবার কর্মীরা কারখানা বন্ধের ঘোষণা পান।“আমাদের একটাই দাবি, তাকেই কারখানা পুনরায় চালুর ঘোষণা দিতে হবে। তা না হলে আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলতে থাকবে। দেশের ১৬ কোটি মানুষের স্বার্থে এবং ওষুধ শিল্পের স্বার্থে এই কারখানা চালু রাখতে হবে।”

ইলিয়াস বলেন, গত কয়েক বছরে কারখানার সংস্কারের নামে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। ছয় মাস ধরে বিজনেস রিভিউ করার কথা বলা হচ্ছে। হঠাৎ লোকসানের কথা বলে কারখানা বন্ধ করা হল। অথচ ২০১৭ সালেও কারখানা লাভজনক ছিল।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানির মোট শেয়ারের ৮১ দশমিক ৯৮ শতাংশই রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ১৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দশমিক ৯১ শতাংশ শেয়ারের মালিক। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে মাত্র ১ দশমিক ১৮ শতাংশ শেয়ার।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত