লেখার উপকরণ সামগ্রী: প্রাচীন যুগে-বর্তমান যুগে

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৪:০০

প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ তার চিন্তালব্ধ জ্ঞানগুলোকে তার পরবর্তী প্রজন্মের হাত তুলে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করত। প্রথমদিকে মানুষ তার সঞ্চিত জ্ঞান বিভিন্নভাবে মনে রাখার চেষ্টা করত। কালক্রমে মানুষের সঞ্চিত জ্ঞান বাড়তে থাকে ফলে চিন্তালব্ধ জ্ঞান স্মরণ রাখা কঠিন হয়ে পরে। মানুষ এ থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে কিছু সাংকেতিক চিহ্ন বিভিন্ন জায়গাতে লিখে রাখার চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু কোথায় সহজে লিখে রাখা যাবে এই চিন্তা থেকে মানুষ বিভিন্ন ধরনের লিখন উপকরণ সমগ্রী আবিস্কার করতে থাকে। প্রাচীনকালে বিভিন্ন এলাকার মানুষ বিভিন্ন ধরনের লিখন উপকরণ সমগ্রী ব্যবহার করত। প্রাচীন লিখন উপকরণ সমগ্রী নিয়ে গবেষণা করলে দেখা যায়, যে সকল এলাকাতে যে উপাদান গুলো বেশী পাওয়া যেত সে এলাকা গুলোতে সেই ধরনের বস্তুর দ্বারা লিখন উপকরণ তৈরি করা হত। 

পাথর (Stone)
সবচেয়ে প্রাচীন লিখন উপকরণ হিসাবে পাথরকে মনে করা হয়। আদিকালে মানুষ পাহাড়ের গুহায় ও পাথরে খোদাই করে বা রং দিয়ে লিখত। খৃস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে সম্রাট অশোক ভারত বর্ষে বিভিন্ন পর্বতের গায়ে উৎকীর্ণ করেছিলেন রাজার আদেশ, ধর্মীয় অনুশাসন ও বাণী। শুধু পাহাড়ের গায়েই নয়, পৃথকভাবে প্রস্তর ফলকও ব্যবহৃত হত। ভারতে অজন্তা ইলোরা পাহাড়ের গুহায় পাওয়া এক বিশেষ ধরনের ছবি যা মানুষর কাছে আজও বিস্ময়। এছাড়া ইনকা ও মেসপটেমিয়া সভ্যার লোকেরাও পাহাড়ে ও পাথরে লিখত। পাহাড়ে ও পাথরে লিখতে বেশ কষ্টসাধ্য ও বহনযোগ্য না হওয়ার কারণে মানুষ এর বিকল্প ভাবতে থাকে। আর এই বিকল্প ভাবনা থেকেই মানুষ নতুন নতুন লিখন উপকরণ আবিস্কার করতে থাকে।

প্যাপিরাস (Papyrus)
প্যাপিরাস একটি গাছের নাম যা নীল নদের ধারে প্রচুর পরিমানে জন্মাত। প্যাপিরাস গাছটি দূর থেকে দেখতে অনেকটা ছাতার মতন। ইহা তিন ইঞ্চি থেকে চার ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। গাছটির বৈশিষ্ট্য অনেকটা আমাদের দেশের নলখাগড়া প্রকৃতির। প্রথমে গাছটি কেটে আনার পর ধারালো কিছু দিয়ে গাছটির আঁশগুলো আলাদা করা হত। তারপর তা আঠা দিয়ে লাগিয়ে বড় করে পাথর দিয়ে ঘষে মসৃণ করে লেখার উপযোগী করা হত। প্যাপিরাস অনেক মসৃণ ও নরম হওয়ার কারণে সহজে লেখা ও রোল করে মোড়ানো যেত। কোন প্যাপিরাস থান একশত গজ র্পযন্ত হত। গ্রীসের মহাকবি হোমার তার বিখ্যাত ইলিয়াড মহাকাব্যটি প্যাপিরাসে লিখেছিল যা প্যাপিরাসের ২৪টি রোলে সম্পন্ন করা হয়েছিল। প্রাচীন মিসরের সকল সাহিত্যকর্ম প্যাপিরাসে লেখা হত। দ্যা বুক অফ ডেথ নামক অতি প্রাচীন গ্রন্থটি (যা বেদের থেকেও প্রাচীন মনে করা হয়) প্যাপিরাসে লেখা হয়েছিল যার একটি কপি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত রয়েছে। তাছাড়া বিখ্যাত আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরির সকল প্রকাশনা প্যাপিরাসে লেখা হয়েছিল।
 

মাটির ফলক বা ক্লে ট্যবলেট (Clay tablet) 
প্রাচীন লিখন উপকরণ হিসাবে হিসাবে মাটির ফলক বা ক্লে ট্যবলেট মূলত ব্যবিলনীয় সভ্যতার মানুষেরা এর প্রচলন ঘটায়। প্রচীনকালে এই এলাকার মানুষ তাদের চিন্তা চেতনাকে এই মাটির ফলক বা ক্লে ট্যবলেটে লিখে রাখত। ব্যবিলনীয় সভ্যতা মূলত ইরাক, ইরান ও সিরিয়ার কিছু অংশ নিয়ে গড়ে উঠেছিল। ভূ-প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী এই সকল এলাকাগুলোতে পাহাড় ছিল না। তাই এই সকল এলাকার মানুষ মাটির  তৈরি চাকতি বানাতো এবং মাটি নরম থাকা অবস্থায় স্টাইলাস নামক বিশেষ কাঠি দিয়ে তার উপর লিখত। পরে তা রোদে বা আগুনে পুড়িয়ে শক্ত করা হত। তারা মাটির ফলক বা ক্লে ট্যবলেটে কিউনিফর্ম ভাষা ব্যবহার করত। কয়েকটি মাটির ফলক বা ক্লে ট্যবলেট দ্বারা তৈরি করা হত একটি বই যার নাম ছিল কিউনিফর্ম বুক। এই ধরনের কিউনিফর্ম বুকের সংগ্রহ নিয়ে প্রচীন আসুরবানীপাল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৮৫০ সালে টাইগ্রীস নদীর তীর হতে স্যার হেনরী লোয়ার্ড সর্ব প্রথম এই মাটির ফলক বা ক্লে ট্যবলেটগুলো আবিস্কার করেন যা ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতার মানুষও এমন ধরনের লিখন উপকরণ ব্যবহার করত যার নিদর্শন পাওয়া গেছে।
  
পার্চমেন্ট (Parchment)
খ্রীষ্টপূর্ব ১৯৭-১৬৯ অব্দে পারগামাম রাজা ২য় ইউকেনিসের সময়ে এশিয়া মাইনর শিক্ষা,সংস্কৃতি পুস্তক প্রকাশনায় বেশ উৎকর্ষ সাধন করেছিল। সেই সময় বিখ্যাত পারগামাম লাইব্রেরির সকল পুস্তক প্যাপিরাসে লিখা হত যা সংগ্রহ করা হত মিসর থেকে। একসময় মিসরের তৎকলীন সম্রাট  টলেমী পারগামাম রাজ্যেও উন্নতি বাধাগ্রস্থ করতে এশিয়া মাইনরে প্যাপিরাস রপ্তানী বন্ধ করে দেয়। ফলে সম্রাট ২য় ইউকেনিসের নির্দেশে প্যাপিরাসের বিকল্প হিসাবে আবিস্কৃত হয় পার্চমেন্ট যা মহিষ বা গরুর চামড়া দিয়ে তৈরি একধরনের বিশেষ লিখন উপকরণ। মহিষ বা গরুর চামড়ার উপর পাথর বা খড়িমাটি ও চুন মিশিয়ে লোহা দ্বার ঘষে মসৃন করে পার্চমেন্ট তৈরি করা হত। পার্চমেন্ট লিখন উপকরণ হিসাবে খুব ভাল ছিল, প্রয়োজনে এটা গুটিয়ে রাখা যেত। আবার লেখাও সহজে নষ্ট হত না। মধ্যযুগে পশ্চিম এশিয়া ও ইউরোপেও লিখার কাজে পার্চমেন্ট ব্যবহৃত হত। 

ভেলাম (Vellum)
চামড়ার আরেক ধরনের লিখন উপকরণ ছিল ভেলাম। ইহা মূলত সদ্যজাত বাছুর গরু ও ভেড়ার চামড়া দিয়ে তৈরি করা হত। সাধারণত গুরুত্বপূর্ন ও নির্বাচিত কোন কিছু লেখার জন্য ভেলাম ব্যবহৃত হত। কারণ ইহা পার্চমেন্ট থেকে অনেক মসৃন ছিল তাই সহজে লিখা যেত এবং মোড়ানো যেত। উৎকৃষ্ট ভেলামকে ইউটেরিন বলা হত। প্রচীনকালে ও মধ্যযুগে রাজকীয় চিঠি ভেলামে লিখা হত। এশিয়া মাইনরে ভেলামের উৎপত্তি যা কালের বিবর্তনে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পরে।

ভূজপত্র (Bhurjpatra)
ভূজপত্র হল এক ধরনের গাছের ছাল যা হিমালয় অঞ্চলে প্রচুর জন্মাত। প্রথমে গাছের বাকলের ভিতরের অংশটি বিভিন্ন মাপে কাটা হত তারপর তা রোদে শুকানো হত এবং তেল দিয়ে পালিশ করা হত। বিশেষ ধরনের তুলি ও রং দিয়ে ভূজপত্রে লিখা হত। ঐতিহাসিকগণের মতে ভূজপত্রগুলো দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থ্যে ৯ ইঞ্চি পরিমান হত। বাকলের ভিতরের অংশকে বলা হত লেবার যা থেকে পরবর্তীতে লিব্রে শব্দের উৎপত্তি যার অর্থ বই। হিমালয়ের পদদেশে বসবাসরত মানুষরাই ভূজপত্রের আবিস্কারক মূলত কাশ্মীর অঞ্চলে এর বেশি ব্যবহার করা হত। প্রচীনকালের ভূজপত্রে লিখিত অনেক উপকরণ পাওয়া গেছে। প্রাচীন লিখন উপকরণ হিসাবে ভুজপত্র বহুদিন ব্যবহৃত হয়েছে।

তালপাতা (Palm leaf)
প্রাচীনকালে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, বার্মা ও শ্যামদেশে তালপাতার ব্যবহার ছিল বলে জানা যায়। ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে সমুদ্র উপকূলে প্রচুর তালগাছ ছিল। মূলত এই এলাকার মানুষ প্রথমে এর ব্যবহার শুরু করে। তালপাতা একদিকে যেমন সহজলভ্য, অন্যদিকে টেকসই। এর পাতা বেশ বড় ও শিরাযুক্ত। প্রায় ২-৩ ফুট দীর্ঘ এবং ১/৪ ইঞ্চি থেকে ৪ ইঞ্চি পর্যন্ত চাওড়া। পাতাগুলো বেশ বড় থাকে তাই তা মাপ অনুযায়ী পাতাগুলো কাটা হয় এবং তা স্থায়ীত বাড়ানোর জন্য পানিতে সিদ্ধ করা হয়। তারপর পাথর ও শঙ্খ দিয়ে ঘষে পালিশ করা হয়। তালপাতা সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে, একটির নাম শ্রীতাল অন্যটির নাম তাল। তবে উভয় পাতায় ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হত। অনেক ঐতিহাসিকগণ তালপাতাকে The strongest of all writing materials বলে অবিহিত করেছেন।
 

ধাতুরপাত (Metal Leaf)
লিখন উপকরণ হিসাবে ধাতুরপাত বেশ জনপ্রিয় ছিল। ধাতুরপাত বিভিন্ন ধরণের ধাতু থেকে তৈরি। ধাতুরপাত হিসাবে সোনারপাত, রুপারপাত, তামারপাত, পিতলেরপাত, ব্রোঞ্জের পাত বেশী ব্যবহৃত হত। যেহেতু এই ধাতুরপাতের স্থায়িত্ব বেশি হত এবং  এদেও রং চকচকে থাকত তাই প্রাচীনকালে মন্দির, মসজিদ, গীর্জা ও উপসানালয়গুলোতে ধাতুরপাতের বেশী প্রচলন ছিল। ধাতুরপাত লোহার চেয়ে হালকা এবং সহজে ব্যহনযোগ্য হবার কারণে দ্রুত ধাতুরপাত পাথরের স্থান দখল করে।
 
তুলট কাগজ (Handmade paper)
ঐতিহাসিকদের মতে ১০৫ খৃস্টাব্দে চীনে কাগজ তৈরির কলাকৌশল আবিস্কৃত হয়। কিন্তু ভারতবর্ষে এর পূর্বেই এক ধরনের কাগজের প্রচলন ছিল। যে কাগজের নাম ছিল তুলট কাগজ। এই কাগজের রং ছিল হালকা হলুদ যা মূলত তুলাজাত, হরিতাল দিয়ে হাতে তৈরি করা হত। প্রাচীন কালে ভারতে এই কাগজ বেশ জনপ্রিয় ছিল। ধর্মীয় গ্রন্থ ও সাহিত্য চর্চায় তুলট কাগজ বেশি ব্যবহৃত হত। তুলট কাগজে লিখা অনেক নিদর্শন ভারত ও বাংলাদেশের জাদুঘর গুলোতে পাওয়া যায়।
 
হাতির দাঁত (Elephant teeth)
প্রাচীন কালে লেখার উপকরণ হিসাবে হাতির দাঁতের প্রচলন ছিল। বর্তমান ইটালীতে হাতির দাঁতের উপর লিখার জন্য বেশ সুনাম ছিল। ব্রাহ্মণদেশে কোন বইকে সুন্দর করার জন্য হাতির দাঁতের ব্যবহার করা হত। প্রাচীন ভারতে হাতির দাঁতকে পাতে রূপান্তর করে তাতে বিভিন্ন  উপদেশ ও বাণী লিখে রাখা হত। মানুষ বন্য প্রাণী সম্পর্কে সচেতন হওয়ার শুরুর পর থেকে এর প্রচলন হ্রাস পেতে থাকে। ভারতীয় ও ব্রিটেনের জাদুঘরগুলোতে হাতির দাঁতের উপর লিখা বিভিন্ন নিদর্শন পাওয়া যায়।
 
কাঠ (Wood)
লিখন উপকরণ হিসাবে কাঠের ব্যবহার প্রাচীন ভারতবর্ষ ও চীনে পরিলক্ষিত হত। মূলত যে সকল এলাকাতে কাঠ বেশি পাওয়া যেত সেসকল এলাকাতে লিখন উপকরণ হিসাবে কাঠের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয় ছিল। কাঠের উপর  খোদাই করে প্রাচীনকালে এক ধরনের বই তৈরি করা হত যাকে কোডেক্স (Codex) বলা হত। ১৪১০ সালের পর ইংল্যান্ডে ও জার্মানীতে কাঠের বই বেশ জনপ্রিয় ছিল। কাঠের উপর লিখা বেশ কষ্টসাধ্য ছিল এবং সহজে তা নষ্ট হত বলে কালের বিবর্তনে লিখন উপকরণ হিসাবে কাঠের ব্যবহার কমে যায়। 
 
কাগজ (Paper)
কাগজ যার ইংরেজী প্রতিশব্দ হল পেপার। পেপার শব্দটি মিসরীয় শব্দ প্যাপিরাস শব্দ থেকে উৎপত্তি হয়েছে। বর্তমান যুগে লেখার প্রধান উপকরণ হল কাগজ যা লেখার জগৎকে প্রসারিত করে জ্ঞান বিজ্ঞানের জয়যাত্রাকে অব্যাহত রেখেছে। ঐতিহাসিকদের মতে চীনে ১০৫ খৃস্টাব্দে কাগজের আবিস্কার হয়। চীনের সম্রাট হোয়া-তির সময়ে টি-সাই-লু নামক একজন চাইনিজ সর্বপ্রথম কাগজ আবিস্কার করেন। প্রথম দিকে চীনে রেশমের কাপড় ও বাঁশের উপর লেখা হত। বাঁশ অনেক ভারী ও সহজে নষ্ট হয় এবং রেশম ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে টি-সাই-লু ভাবলেন বাঁশ, গাছের বাকল, পুরানো কাপড় মিশিয়ে মন্ড তৈরি করে কাগজ বানানোর। তিনি এতে সফল হয়ে কাগজ আবিস্কার করলেন। পরবর্তীতে টি-সাই-লু প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের শিকার হন এবং বিষপাণে আত্মহত্যা করেন। তার প্রতি সন্মান দেখিয়ে চীনারা একটি মন্দির তৈরি করেন যা আজো চীনে রয়েছে। এখনও চীনে প্রত্যেক কাগজ ব্যবসায়ী তাঁর ছবির সামনে ধূপকাঠি জালিয়ে পূজা করে থাকেন।

কাগজ আবিস্কারের পর প্রায় ছয়শত বছর কাগজ তৈরির কলাকৌশল শুধুমাত্র চীনাদের কাছে ছিল। পরবর্তীতে সমরকন্দেও যুদ্ধে চীনারা মুসলমানদের কাছে পরাজিত হলে অনেক চীনা যুদ্ধাবন্দী হয়। যাদের মধ্যে অনেকে ছিল কাগজ তৈরির কারিগর। এই সকল কারিগরদের কাছ থেকে মুসলমানরা কাগজ তৈরির কলাকৌশল জেনে যায়। এইভাবে কাগজ তৈরির কলাকৌশল পৃথিবীব্যাপী বিস্তৃতি লাভ করে। লিখন সমগ্রী হিসাবে কাগজ  আজও সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

মানুষ যেদিন থেকে তার আহরিত জ্ঞান, লেখন উপকরণ সমগ্রীগুলোতে লিখতে শিখেছে সেদিন থেকেই মানুষ তার পূর্বসূরীদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, কলা ও চিকিৎসাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য লাভ করে চলেছে। আজ বিশ্বে যে উন্নতি পরিলক্ষিত হয় তার মূলে রয়েছে লেখা ও লেখন উপকরণের অবদান। এই উন্নতি কাগজ আবিস্কারের পর আরো ত্বরান্নিত হয়। লেখন উপকরণ হিসাবে কাগজের এখনও কোন বিকল্প নেই। অনেকে বলে থাকেন কাগজের বিকল্প হল কম্পিউটার কারণ কম্পিউটারে খুব সহজে লিখা যায়, সংরক্ষণ করা যায় আবার প্রয়োজনে তা সংশোধনও করা যায়। সমালোচকরা আবার বলেন কম্পিউটারে যা কিছুই লেখা হোক তা পড়ার জন্য আপনাকে কাগজে প্রিন্ট করতেই হবে। যাহোক এই বিতর্ক হয়ত চলবেই কিন্তু এটা এখন স্বীকার করতেই হবে যে নতুন লিখন উপকরণ হিসাবে কম্পউটার এখন বিশেষ স্থান দখল করে নিয়েছে।  

লেখক: সরকারি কর্মকর্তা

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত