অর্থনীতি সঙ্কটে পড়ে বেকায়দায় আইএস

প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১১:৩১

সাহস ডেস্ক

ভেঙে পড়েছে কথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস এর ব্যবসা কাঠামো। বিস্তীর্ণ অঞ্চল বেহাত, আর তেলকূপের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বেকায়দায় পড়েছে আইএস। কমে গেছে কর থেকে রাজস্ব আহরণের হারও। 

সম্প্রতি কিংস কলেজ লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অফ রেডিক্যালাইজেশন অ্যান্ড পলিটিক্যাল ভায়োলেন্স (আইসিএসআর) এক গবেষণায় দেখিয়েছে, আইএস এর রসদ ফুরিয়ে যাচ্ছে, যার মূল কারণ একের পর এক এলাকায় কর্তৃত্ব হারানো।

পাশাপাশি তেল সরবরাহের সব পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আইএস এর ফুলে-ফেঁপে ওঠা অর্থনীতি চরম সঙ্কটে পড়েছে বলে ওই প্রতিবেদনের বরাতে জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক ইনডিপেনডেন্ট। খনিসমৃদ্ধ এলাকাগুলো ছিল আইএসের সম্পদের অন্যতম উৎস। তবে প্রশাসন চালাতে গিয়ে আমলাতান্ত্রিক বিষয়গুলো তাদের খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ ঠিক কত তা জানা না গেলেও ২০১৪ সালের তাদের বার্ষিক আয় দুইশ কোটি ডলার থেকে কমে গেল বছর ৯০ কোটি ডলারে ঠেকেছে বলে আইসিএসআর এর তথ‌্য।

তাদের শুধু নিজেদের কথা ভাবলেই চলছে না। রাস্থাঘাট মেরামত করতে হচ্ছে। শিক্ষকদের বেতন দিতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবার মতো বিষয়গুলোও দেখভাল করতে হচ্ছে। এসবের কোনোটিই আল-কায়েদা বা অন‌্য জঙ্গি সংগঠনগুলোকে করতে হয়নি। এ অবস্থায় যোদ্ধাদের মাসিক বেতনও কমিয়ে দিয়েছে আইএস। ঘাটতি কমাতে করের হার বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

আইএস এর কোষাগার বা বায়তুল মাল আল-মুসলিমীন থেকে এই হিসেব পাওয়া গেছে বলে আইসিএসআর তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

আইএসকে আরও বেশি বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে ইরাক সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত। ইসালামিক স্টেটের অঞ্চলে দায়িত্বে থাকা ইরাকি সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বন্ধ করে দেওয়ায় তাদের দায়িত্বও আইএসকে নিতে হচ্ছে। এছাড়া আন্তঃসীমান্ত চোরাচালান বন্ধেও বেশ তৎপর ইরাক সরকার।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএস কী পরিমাণ বিদেশি সাহায্য বা আর্থিক সহায়তা পেয়েছে, সে বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আইএস এর রাজস্বের একটি বড় অংশ এতদিন আসছিল তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকার আয়কর থেকে। আর তেল ছিল অর্থের দ্বিতীয় খাত, যা এখন ধ্বংসের মুখে।

আইএসের তহবিল সংগ্রহের প্রক্রিয়াকে পিরামিড স্কিমের সঙ্গে তুলনা করেন নিউম্যান। গত নভেম্বর পর্যন্ত ইরাকে ৬২ শতাংশ এবং সিরিয়ায় ৩০ শতাংশ ভূমি হারিয়েছে আইএস।

যখন সীমান্তটি আইএসের নিয়ন্ত্রণে ছিল, চোরাকারবারিরা তেল কিনতে দক্ষিণে যেত এবং ট্যাংকার ভর্তি করে তেল নিয়ে তুর্কি সীমান্ত পার হত। কিন্তু এখন সীমান্তটি কুর্দি বাহিনীর নিয়্ন্ত্রণে বলে তেল বিক্রি প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত