ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাইরে হামলা, নিহত ৪ আহত ২০

প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০১৭, ০২:৩০

সাহস ডেস্ক

ব্রিটেনের পার্লামেন্টের বাইরে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০ জন।

স্থানীয় সময় ২২ মার্চ (বুধবার) বিকেল পৌনে ৩টার দিকে লন্ডনে পার্লামেন্টের সভাস্থল ওয়েস্টমিনিস্টার প্যালেসের কাছে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে এ হামলা হয়।  

নিহতদের মধ্যে একজন হামলাকারী নিজে, একজন তার ছুরিকাঘাতে জখম সশস্ত্র পুলিশ সদস্য এবং অপর দু’জন ওই সন্ত্রাসীর গাড়ির নিচে চাপা পড়া পথচারী। আহতদের বেশিরভাগই ওই সন্ত্রাসীর গাড়ির চাপায় জখম হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আহতদের মধ্যে তিনজন ফরাসি শিক্ষার্থী রয়েছেন। রয়েছেন কয়েকজন কোরিয়ানও। বাকিদের পরিচয় তৎক্ষণাৎ জানা যায়নি।

পুলিশের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, হামলাকারী প্রথমে ওয়েস্টমিনিস্টার ব্রিজে পথচারীদের ওপর তার চার চাকার গাড়ি চালিয়ে দেয়। এরপর গাড়ি থেকে ছুটে গিয়ে ওই পুলিশ সদস্যকে ছুরিকাঘাত করে। তখন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাকে গুলি করেন। ওদিকে তার গাড়ির চাপায় কাতরাতে থাকেন পিষ্ট হওয়া পথচারীরা। প্রথম দিকে ছুরিকাহত পুলিশ সদস্য, হামলাকারী এবং অন্যদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হলেও পরে চারজনের মৃত্যুর খবর দেন চিকিৎসকরা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, হামলাকারীর গাড়ির চাপায় আহত লোকজন রাস্তায় পড়ে কাঁতরাচ্ছে। তাদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

হামলার প্রথম দিককার চিত্র তুলে ধরে সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রথমে পরপর চারটি গুলির বিকট শব্দ শুনতে পান পথচারীরা। তখন ৪০-৫০ জনের মতো মানুষ নানাদিকে ছোটাছুটি শুরু করে। পরে হামলার বিষয়টি বুঝতে পারে সবাই। তৎক্ষণাৎ সতর্কতা পেয়ে গাড়ি বহর নিয়ে পার্লামেন্ট এলাকা ছেড়ে নিজের বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিটে চলে যান প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। তারপর তার মুখপাত্র এক বিবৃতি দিয়ে জানায়, প্রধানমন্ত্রী নিরাপদ আছেন, যদিও এ ঘটনায় তার উপস্থিতি ছিল না।

অপরদিকে, হামলার সময় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের অধিবেশন চলছিল। গুলির শব্দে এবং সতর্কতা পেয়ে অধিবেশন মুলতবি করা হয়। তখন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পার্লামেন্টের সদস্যদের ভেতরে অবস্থান করতে বলা হয়। একইসঙ্গে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজসহ আশপাশের বাসিন্দাদেরও বাসা-বাড়িতে অবস্থান করতে বলা হয়। এখন পর্যন্ত এ নির্দেশনাই বলবৎ আছে। যদিও পার্লামেন্টের ভেতরে পর্যাপ্ত খাবার-পানীয় নেই বলে এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন অনেক সদস্য।

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ এটাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ এলাকাসহ পুরো লন্ডনে সতর্কতা জারি করেছে। তারা ঘটনাস্থলে এবং পার্লামেন্ট এলাকায় সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে জরুরি ‘কোবরা’ বৈঠকে (সংকটকালে ডাকা সংক্ষিপ্ত বৈঠক) বসেছেন প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। তিনি হামলায় হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সংকট কাটিয়ে উঠতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত