কুষ্টিয়ায় মীম হত্যার চার মাসেও গ্রেপ্তার হয়নি আসামীরা

প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:১৬

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আলোচিত স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতনে গৃহবধূ তাসমীম আলম মীম হত্যা মামলার চারমাসেও আসামীরা পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। 

মীম হত্যার তদন্ত রিপোর্টে হত্যার আলামত মিললেও গ্রেপ্তার হয়নি আসামীরা। এ মামলার প্রধান আসামী গৃহবধূ মীমের স্বামী বাপ্পি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরব রয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু তারপরও গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহত মীমের পরিবার।

পরিবারের ভাষ্য, এ মামলার দুই আসামী স্বামী ও শাশুড়ি তাদের ধরতে পুলিশের আন্তরিকতা প্রয়োজন। নিহত মীমের মা তাজমা খাতুন বলেন, দিন গুনতে গুনতে মেয়ে হত্যার চার মাসেও আসামীরা পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। প্রথম থেকেই বলে আসছি আমার মেয়েকে ওরা হত্যা করেছে। তদন্ত রিপোর্টে হত্যার আলামত মিলেছে। অথচ পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে আসামীরা আত্ম গোপনে। এ মামলার চারমাস পেরিয়ে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। আমার মনে হচ্ছে পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না।

 
এ মামলার প্রথম দিকেই প্রশাসন মামলা নিতে গড়িমসি করেছিল। এ হত্যা মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশ আমরা। আদতেও মামলার তদন্ত হবে কি না এতে সন্দেহ রয়েছে। তবে এই জীবনে আমি কিছুই চাই না। আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। নিহত মীমের পিতা মহিবুল আলম বলেন, সন্তান হত্যার বিচার হবে কি না তাও জানিনা। বলতেই পারি অবহেলায় চলছে এ মামলার কাজ। মেয়েটা আমাদের খুবই আদরের ছিল। সন্তান হারানোর বেদনা আসলে কেউ বুঝলো না। চোখের জলই এখন আমার পরিবার সম্বল।

উল্লেখ্য, বিয়ের পর থেকেই স্বামী বাপ্পি ও শাশুড়ি কোহিনুর মোটরসাইকেল যৌতুক দিতে হবে বলে দাবি করতে থাকেন। এতে গৃহবধূ মীমকে উঠতে-বসতে নানান ধরনের কথা শুনান। এই নিয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতনে গুরুত্বর আহত হলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে মারা যান গৃহবধূ মীম। মীমের মৃত্যুর পর তার মরদেহ নিয়ে বিচারের দাবিতে তখন কুষ্টিয়াসহ সারাদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ হয়েছিলো। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই অরুনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি কলটি রিসিভ করেননি।

দৌলতপুর থানার (ওসি) জহুরুল আলম বলেন, আসামীরা আত্মগোপনে রয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ সঠিক নয়। এ মামলার আসামীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ মামলার আসামিদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত