বিমসটেক নেতাদের সম্মিলিত কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২২, ১২:৫০

সাহস ডেস্ক

বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের সাতটি দেশের জনগণের সুবিধার্থে এই অঞ্চলের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বিমসটেক নেতাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এই অঞ্চলের সম্পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে টেকসই ও স্থিতিস্থাপক বঙ্গোপসাগর অঞ্চল পুনর্গঠনের জন্য আমাদের সর্বজনীন কৌশল খুঁজে বের করতে হবে।’

বুধবার (৩০ মার্চ) শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে পঞ্চম বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি ভাষণে একথা বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সম্মেলন সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করার এবং একাধিক চ্যালেঞ্জের অভিন্ন সমাধান খুঁজে বের করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, এই অঞ্চলের বিশাল জনসংখ্যা ‘শুধু চ্যালেঞ্জই নয়, একটি সুযোগও।’

তিনি বলেন, এই শীর্ষ সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতির কারণে বিশ্ব অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশেষ করে বিমসটেকের মতো দেশগুলোর জনগনের জীবন-জীবিকা কঠিন হয়ে উঠতে শুরু করেছে।

বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকেই আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিবেশিদের সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতার স্বপ্ন দেখেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক নেতাদের নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আহ্বান জানান:

ক) জনগণের জন্য দ্রুত বাস্তব সুবিধার লক্ষ্যে বিমসটেক এফটিএ, বিমসটেক কেন্দ্র, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র, শক্তি কেন্দ্র, সংযোগ প্রকল্প, এনার্জি গ্রিড সংযোগ, সাংস্কৃতিক কমিশন ইত্যাদির মতো সমস্ত সম্মত সিদ্ধান্তের অবিলম্বে বাস্তবায়ন ও কার্যকরীকরণ নিশ্চিত করা।

খ) সংস্থার গতি তরান্বিত করতে অন্যান্য সমস্ত আইনি উপকরণ এবং নীতি সংক্রান্ত নথিগুলোর প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা যা ইতোমধ্যেই চলছে কিন্তু এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

গ) সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলা এবং নতুন সুযোগগুলোকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে বিমসটেকের বাইরের প্রাসঙ্গিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব এবং আউটরিচ প্রসারিত করে সৃজনশীলও উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ায় জড়িত হওয়ার জন্য সংস্থাকে তৈরি করা।

এসময় গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে সমুন্নত রেখে গত এক দশকে বাংলাদেশ কীভাবে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব পরিবর্তন করেছে তা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সময়ের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ৪১ দশমিক পাঁচ শতাংশ থেকে ২০ দশমিক পাঁচ শতাংশে নেমে এসেছে।

তিনি বলেন, মাল্টিমোডাল পরিবহন সংযোগ বিমসটেক সহযোগিতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং সরকার বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশকে সংযুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বিমসটেক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার কাঠামোর মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমরা বিমসটেক কনভেনশন অন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড কনভেকশনাল ক্রাইমসের (সিটিটিসি) অধীনে কাজ করছি।’

বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড নিয়ে গঠিত বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক)।

পঞ্চম বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনটি আয়োজন করছে শ্রীলঙ্কা। এবারের সম্মেলনে একটি স্থিতিস্থাপক অঞ্চল, সমৃদ্ধ অর্থনীতি ও  জনগণের সুস্বাস্থের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত