বিভীষিকাময় ২১ আগস্ট আজ

প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২২, ১১:৫৯

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি : ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা।

২১ আগস্ট ২০০৪। সকাল গড়িয়ে দুপুর। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মিছিলে মিছিলে মুখরিত রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ। বিকেলে অস্থায়ী মঞ্চে এসে পৌঁছান দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বক্তব্য শেষ করে সবেমাত্র নামবেন, ততক্ষণে বিকট শব্দে কেঁপে উঠল পুরো এলাকা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রক্তগঙ্গা বয়ে গেলো বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে। প্রয়াত মেয়র হানিফসহ কয়েকজন নেতা মানবঢাল তৈরি করে শেখ হাসিনাকে আগলে রাখেন।

সেদিন শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও আহত হন, ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার শ্রবণশক্তি। নিহত হন আওয়ামী লীগের ২২ নেতাকর্মী। আর আহত হন ৫০০ জন।

ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী আইভি রহমানসহ সবমিলিয়ে ২৪ জন মারা গিয়েছিলেন। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন ৫ শতাধিক নেতা-কর্মী। আহত হন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা। আহত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী-সমর্থকদের অনেকে এখনও স্প্লিন্টারের আঘাত নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

দেশের ইতিহাসে সন্ত্রাসের নজিরবিহীন নৃশংসতা দেখে বিশ্ব। রক্তমাখা বিভীষিকাময় রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞের দিন হিসেবে ইতিহাসের পাতায় ঠায় হলো ২১ আগস্ট। নারকীয় সেই গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকী আজ রবিবার।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ঘটা এই হত্যাযজ্ঞে দুইটি মামলা হয়। একটি হত্যা মামলা এবং অপরটি বিস্ফোরক আইনে মামলা। দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০১৮ সালে রায় দেন আদালত। দুই রায়ে মোট ৪৯ জন আসামির মধ্যে আদালত ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং বাকি ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। মামলাটি এখন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন।

এদিকে ২১ আগস্ট উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে সকাল ১০টায় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। নিহতদের স্মরণে হবে আলোচনা সভা। এতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করবেন।

সভাকে কেন্দ্র করে জাতীয় প্রেস ক্লাব, পল্টন ও জিরো পয়েন্ট এলাকায় যান চলাচল সীমিত থাকবে। ফলে ওই রাস্তাগুলো সকাল ৯টা থেকে কর্মসূচি শেষ না হওয়া পর্যন্ত ট্রাফিক ডাইভারশন চলবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এক্ষেত্রে এসব এলাকায় চলাচলের ক্ষেত্রে নগরবাসীকে ভিন্ন সড়ক ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।

দিনটি উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ হামলার মূললক্ষ্য ছিল দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করা, আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করে হত্যা, ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি ও দুঃশাসনকে চিরস্থায়ী করা।

সাহস২৪.কম/এসএস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত