জবিতে ছাত্রলীগ দ্বারা সাংবাদিক হেনস্তা থামছেনা

প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪:০৬

সাহস ডেস্ক

আবারও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শাখা ছাত্রলীগের কর্মী কর্তৃক একাধিক সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। এসময় সে ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ কর্মীর নাম গাজী মো. শামসুল হুদা। সে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজির একনিষ্ঠ কর্মী ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের  ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, একাউন্টিং অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালীন এক ভলান্টিয়ারের সাথে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এসময় ঢাকা দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন ও একাউন্টিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম সবাইকে সরিয়ে দিতে গেলে ছাত্রলীগ কর্মী গাজী এক শিক্ষকের গায়ের উপর এসে পড়ে। তখন কর্তব্যরত এক সাংবাদিক পরিচয় জানতে চেয়ে সরিয়ে দিতে চাইলে সে উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিককে মারতে উদ্যত হয়। পরবর্তীতে কামরুল হাসান রিপন ও অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম সবাইকে সরিয়ে দেয়।

পরে বিষয়টি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজীকে অবহিত করলে তিনি বিষয়টি সমাধানের জন্য অভিযুক্ত গাজী ও তার নেতাকর্মীদের পাঠান। কিন্তু সমঝোতা করতে এসে গাজী এবং কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৩তম আবর্তনের ফজলে রাব্বি সহ আরও একাধিক ছাত্রলীগ কর্মী উপস্থিত সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের পরিচয় জানতে চাইলে আলোকিত বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আহনাফ তাহমিদ ফাইয়াজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক পরিচয় দিলে গাজী আক্রমণাত্মক হয়ে বলেন, ‘তোর প্রেসক্লাব সাংবাদিকদের পুটকির মধ্যে ঢুকায় দিবো’। এসময় রাব্বি উপস্থিত অন্য সাংবাদিকদের উপরে চড়াও হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী গাজী মো. শামসুল হুদা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। একটু ঝামেলা হয়েছিল সেটা মিউচুয়াল হয়ে গেছে। এসময় গালাগালির কোনো ভিডিও থাকলে সেটা দিয়ে কি করতে পারবা করে দেখাও বলে বারবার প্রতিবেদকের ব্যক্তিগত বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজী বলেন, আমি বিষয়টা শুনেছি। একাউন্টিং বিভাগের প্রোগ্রামে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটেছিলো। পরে মিউচুয়াল করতে গেছিলো। কিন্তু এইরকম বাজে মন্তব্য সে করে থাকলে আমি নিজে এর বিচার ও ব্যবস্থা নিবো।

উল্লেখ্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এর আগে নানা অভিযোগের মধ্যে গত বছরের ৪ আগস্ট, ২০২২ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়া, ২২ জানুয়ারি, ২০২৩ পেশাগত দায়িত্বপালনকালে সাংবাদিকদের ফোন কেড়ে নেওয়ার নজির রয়েছে। এমনকি বিগত বছরের ৪ ডিসেম্বর ৪ জন সাংবাদিকের উপর অতর্কিত হামলাও চালায় তারা‌। এছাড়া সাংবাদিক হেনস্থা নিয়ে কতোয়ালি থানায় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি- সম্পাদকের বিরুদ্ধে একাধিক জিডি করা আছে।

সাহস২৪.কম/এএম.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত