‘বিশ্বকাপে ইরানের বদলে ইউক্রেনকে খেলতে দেয়া উচিত’

প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২২, ১৭:০৮

সাহস ডেস্ক

কাতার বিশ্বকাপে ইনারকে খেলতে না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেনের অন্যতম ক্লাব শাখতার দোনেৎস্ক। ক্লাবটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসনে ইরানের সামরিক সহায়তা রয়েছে। ক্লাবটির শীর্ষ এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, কিয়েভে হামলায় ইরানের ড্রোন-সহায়তা পেয়েছে রাশিয়া। তিনি বলেন, বিশ্বকাপে ইরানের বদলে ইউক্রেনকে খেলতে দেয়া উচিত।

শাখতারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সের্হেই পালকিন নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘ইরানের নেতারা যখন বিশ্বকাপে নিজেদের জাতীয় দলের খেলা উপভোগ করবে তখন ইরানি ড্রোন আর মিসাইলের আঘাতে ইউক্রেনিয়ানরা নিহত হবে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘ড্রোন ইরানের তৈরি করা এবং ইরানই এগুলো সরবরাহ করেছে। ইরানের সামরিক বাহিনী এই ড্রোন চালনা ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত, যা ঘর, জাদুঘর, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, খেলার মাঠ ধ্বংসের পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা ইউক্রেনিয়ানদের হত্যা করছে।’

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে আখ্যা দিয়েছেন এই ক্লাব কর্তা। রাশিয়াকে সহায়তা করার জন্য ফিফা ও আন্তর্জাতিক ফুটবল মহলের কাছে ইরানকে নিষিদ্ধের দাবি তুলেছেন তিনি। পালকিন বলেন, ‘ইউক্রেনীয়ানদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণের জন্য ফিফা ও আন্তর্জাতিক ফুটবল মহলের কাছে বিশ্বকাপ থেকে ইরানকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছে শাখতার।’

তবে কাতার বিশ্বকাপে ইরানকে নিষিদ্ধ করে তাদের জায়গায় ইউক্রেনকে খেলানোর দাবি জানান তিনি, ‘বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা প্রমাণ করেছে ইউক্রেন, যেহেতু প্লে-অফে অন্য দেশের জাতীয় দলগুলোর মতো স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল না ইউক্রেন। তবু হৃদয় নিংড়ে খেলেছে।’ গত জুনে কার্ডিফে বিশ্বকাপ ফুটবল প্লে-অফ ম্যাচে ওয়েলসের কাছে ১-০ গোলের হারে কাতারে যাওয়ার টিকিট পায়নি ইউক্রেন।

এদিকে বিশ্বকাপের আইন অনুযায়ী কোনো দেশ যদি নাম প্রত্যাহার করে নেয় সেক্ষেত্রে নতুন কোনো দেশ অংশ নিতে পারবে বিশ্বকাপে। তবে অংশগ্রহণের শর্ত পূরণ করা কোনো দলকে বাদ দিয়ে নতুন দলকে যুক্ত করার কোনো আইন এখন পর্যন্ত প্রণয়ন করেনি বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আর এশিয়ান কোনো দলকে নিষিদ্ধ করে ইউরোপের কোনো দলকে বিশ্বকাপে খেলানোর অতীত নজিরও নেই ফিফার। এদিকে পালকিনের যুক্তি, ইরানের জায়গায় ইউক্রেনকে বিশ্বকাপে খেলালে ‘সেটি ঐতিহাসিক এবং খেলাধুলার দৃষ্টিকোণ থেকে সুবিচার।’ তবে পালকিনের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেন ফুটবল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। খবর-সংবাদ সংস্থা এএফপি।

আগামী ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হবে কাতার বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপের ‘বি’ গ্রুপে খেলবে ইরান। গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও যুক্তরাষ্ট্র। ২১ নভেম্বর ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ইরান। তবে কয়েক দিন আগে বিশ্বকাপ থেকে ইরানকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠিয়েছেন ইরানের ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা। স্পেনের আইনজীবী ফার্ম রুইজ-হুয়ের্তা অ্যান্ড ক্রেসপোর মাধ্যমে এই চিঠি পেয়েছে ফিফা। বিবিসি জানিয়েছে, ইরানের কিছু ফুটবলার এবং অন্য অ্যাথলেটরা তাদের দেশের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে নিষিদ্ধ করার অনুরোধ করেছেন ফিফার কাছে। চিঠিতে দাবি করা হয়, ফুটবলে সরকারি হস্তক্ষেপ ফিফার নিয়মের বিরোধী। ইরানে নারীদের স্টেডিয়ামে ঢুকতে দেয়া হয় না। তাই ‘নিরপেক্ষ থাকার সুযোগ নেই ফিফার।’

এছাড়া গত ১৬ সেপ্টেম্বর হিজাব নীতি না মানায় মাসা আমিনি নামের এক তরুণী দেশটির পুলিশের হেফাজতে নিহত হন। এর পর থেকে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ইরানে। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ মানুষ মারা গেছেন। এদিকে, চলতি মাসেই নারীদের স্টেডিয়ামে ঢুকতে না দেয়াকে কেন্দ্র করে দেশটিকে বিশ্বকাপ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছিল নারীবাদী সংগঠন ওপেন স্টেডিয়ামস।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত