বঙ্গবন্ধু ১ লাখ ৪৭ হাজার ভূমিহীন পরিবার পুনর্বাসন করেন
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০১৭, ১৬:২৫
![](https://sahos24.com/templates/sahos-v2/images/sahosh.png)
![](/assets/news_photos/2017/08/08/image-25103.jpg)
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনকালে ১,৬৭,৮৩০ একর খাস জমি বরাদ্দ দানের মাধ্যমে ১,৪৭,৩২৩টি ভূমিহীন পরিবার পুনর্বাসন করেন।
বঙ্গবন্ধু সরকারই প্রথম দেশে ভূমিহীন, দুস্থ এবং নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের পুনর্বাসনে গুচ্ছগ্রাম তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
এই উদ্যোগের সাতটি গুচ্ছগ্রাম তৈরি করা হয়। এগুলো হলো- নোয়াখালীর সুবর্নচর উপজেলার চরক্লার্কে চারটি এবং কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার দিয়ারা বালুয়া, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরপরাগাছা এবং ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ।
এছাড়াও ৭টি গুচ্ছগ্রামে ১,৪৭০টি পরিবার পুনর্বাসন করা হয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের শুরুতে বাস্তুচ্যুত ২ কোটি লোকের বাসস্থান ও খাদ্যের সংস্থান করেন। এক্ষেত্রে তিনি ১৯৭২ সালের জুন পর্যন্ত দীর্ঘ ছয়মাস ব্যাপী পুনর্বাসন উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
ভারত থেকে উদ্বাস্তুদের দেশে ফিরিয়ে আনতে তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। গৃহহীন মানুষের জন্য অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করেন এবং কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমোর ও তাঁতীদের তাদের অর্থনৈতিক জীবনে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৭২ সালের জানুয়ারি নাগাদ প্রায় ১ কোটি উদ্বাস্তু ভারত থেকে দেশে ফিরে আসেন জাতিসংঘ এবং অন্যান্য বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর সহায়তায় বঙ্গবন্ধু সরকার নতুন কোন করারোপ না করে বাজেটে উন্নয়ন কর্মসূচির অধীনে ৫৫০ কোটি টাকার পুনর্বাসন বাজেট উপস্থাপন করেন।
সরকার প্লানিং কমিশন গঠন করে এবং পরে ৪,৪৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
যুদ্ধ পরবর্তী পুনর্বাসন কর্মসূচির অধীনে ১ দশমিক ৪১ লাখ মণ খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়। ৯ লাখ গৃহ পুনঃনির্মাণ করা এবং ভূমিহীন দুস্থ ও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ৯ হাজার প্লট বিতরণ করা হয়।
স্বাধীনতাযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি ভবনের জন্য প্রায় ১০ কোটি এবং বেসরকারি খাতের ভবন সংস্কারে ৮২৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
আবাসন সমস্যা সমাধানে পুনঃনির্মাণ কাজ ১০টি সেক্টরে ভাগ করে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করেন। এগুলো হলো- বিল্ডিং ডাইরেক্টরেট, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার্কস, ডিপার্টমেন্ট অব ফায়ার সার্ভিস, ডিপার্টমেন্ট অব পুলিশ, পর্যটন কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশ রাইফেল সার্ভে ডিপার্টমেন্ট।
বঙ্গবন্ধু অর্থ সংস্থান করে ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা প্রস্তুতি’ কার্যক্রম গ্রহণ করেন। এজন্য ২০,৪৩০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ১০০ বেশি বহুতল আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয় এবং ১৩৭টি ‘মাটির কেল্লা’ তৈরি করা হয়। প্রতিটি ১৫ মিটার উঁচু করে তৈরি করা হয়। সেখানে মানুষের আশ্রয়ের পাশাপাশি গবাদিপশু আশ্রয় দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়। স্থানীয়দের কাছে ‘মাটির কেল্লা’ ‘মুজিব কেল্লা’ হিসেবে পরিচিত।
বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার অধীন পোড়াগাছায় ‘মুজিব কেল্লা’ উদ্বোধন করেন এবং নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত, দুস্থ এবং গৃহহীন লোকদের সরকারি খাস জমিতে পুনর্বাসনে নোয়াখালী জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
সূত্র: বাসস