রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ৪ বছর : বিচারের অগ্রগতি নেই

প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০১৭, ১১:৩৯

সাহস ডেস্ক

২০১৩ সালের এই দিনে রানা প্লাজা ভবন ধসে ১ হাজার ১৩৬ জন নিহত হয় এবং আহত হন প্রায় ২ হাজার জন। বিশ্ব বিবেককে নাড়া দেওয়া ওই ঘটনায় ৩টি মামলা হয়। চার বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত মামলার বিচারে কোনো অগ্রগতি নেই।

৩টি মামলার মধ্যে, ত্রুটিপূর্ণ জেনেও শ্রমিকদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগে মামলাটি করে পুলিশ, সরাসরি হত্যার অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন নিহত শ্রমিক জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী শিউলী আক্তার এবং বিল্ডিং কোর্ড অনুসরণ না করার অভিযোগে ইমারত আইনে মামলাটি করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

পুলিশের এবং নিহত শ্রমিক জাহাঙ্গীরে স্ত্রী শিউলী আক্তারের মামলা ২টির একসঙ্গে এবং অপরটির আলাদা তদন্ত হয়। ঘটনার দুই বছরের বেশি সময় পর ২০১৫ সালের ১ জুন তদন্ত শেষে আদালতে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর।

পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে ভবন মালিক সোহেল রানা ও তার মা-বাবাসহ ৪১ জনকে এবং ইমারত নির্মাণ আইন না মেনে ভবন নির্মাণের অভিযোগে সোহেল রানাসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়। দুটি অভিযোগপত্রে মোট আসামি ৪২ জন। এর মধ্যে সোহেল রানাসহ ১৭ জন দুটি মামলারই আসামি। এ ছাড়া রানা প্লাজা নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক আরেকটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া ৩টি মামলার মধ্যে হত্যাসহ ২ মামলার বিচার অভিযোগ গঠনের পর উচ্চ আদালতে নির্দেশ প্রায় এক বছর ধরে নিম্ন আদালতে বিচার কাজ স্থগিত রয়েছে। ওই কারণে গত এক বছরে নিম্ন আদালত কোনো সাক্ষ্যগ্রহণ করতে পারেনি।
অন্যদিকে রানা প্লাজার ভবন নির্মাণে দুর্নীতির অপর মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির পর আগামি ৮ মে আদেশের জন্য ধার্য রয়েছে।

হত্যা মামলা :

হত্যা মামলায় ২০১৫ সালের ১ জুন রানা, তার বাবা-মাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডির সহকারি পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর। এরপর প্রায় এক বছর ধরে মামলাটির পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের পর মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ার পর ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।

ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

মামলার ৪১ আসামির মধ্যে মো. শাহ আলম ওরফে মিঠু, মো. আবুল হাসান ও সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জনির বিরুদ্ধে আসামি সোহেল রানাকে পালাতে সহযোগিতার জন্য দণ্ডবিধির ২১২ ধারায় এবং অপর ৩৮ আসামির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়। একইসঙ্গে ওই বছর ১৮ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করা হয়। কিন্তু হত্যার ধারায় অভিযোগ গঠন করা ৩৮ আসামির মধ্যে ৭ জন চার্জ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করায় হাইকোর্ট মামলাটির নিম্ন আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করে। ফলে ওই কারণে এখন পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারেনি আদালত।

সর্বশেষ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণের ধার্য দিনের একই কারণে সাক্ষ্য গ্রহণ পিছিয়ে আগামী ৭ মে পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন বিচারক।

একইসঙ্গে ওইদিন বিচারক ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটরকে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে অথবা পৃথকভাবে মামলার অভিযুক্ত অপর আসামিদের বিচারকাজ চালানো যায় কি না সে বিষয়ে পরামর্শ করার পরামর্শ দেন।

 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত