অন্তোনিও গ্রামসি ও তাঁর নিউ অর্ডার

প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০১৭, ১৫:১৭

প্রদীপ ঘোষ

দেশটির নাম ইতালি। ১৯৮১ সালের ২২ জানুয়ারি দক্ষিণ ইতালির মার্দিনিয়া নামক এক পশ্চাদপদ গ্রামে জন্ম হয় অন্তোনিত্ত গ্রামসির। জীবনের শুরুতেই ঘটে এক দুর্ঘটনা যার ফলে সমস্ত জীবনটাই কাটে তার অর্ধপঙ্গু অবস্থায়। দরিদ্র পিতার অস্বচ্ছলতার কারণে বাঁধা প্রাপ্ত হয় তার শিক্ষা জীবন। কিশোর বয়সেই পরিবারের স্বচ্ছলতার জন্য পরিশ্রম করতে হয় তাকে। তা সত্ত্বেও অধ্যয়নের প্রবল ইচ্ছায় ১৯১১ সালে তুরিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি ভাল করেন। তাঁর বিষয় ছিলো ভাষাতত্ত্ব। ছাত্র অবস্থায় যুক্ত হয়ে পড়লেন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে। থেমে গেল উচ্চতর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অধ্যায়।

১৯১৩ সালে গ্রামসি সমাজতান্ত্রিক যুব দেত্তায়েলনের কর্ম তৎপরতায় যুক্ত হয়ে পড়েন। ১৯১৪ সালে তুরিনে সোস্যালিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন এবং সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য হিসেবে শ্রমজীবি শ্রেণির সফল শিক্ষকদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তাঁর বিপ্লবী চেতনায় সর্বদা অনুসন্ধান করতো আত্মশক্তির ক্ষমতা। শারীরিক ভাবে কুজো থাকার কারণে এবং বক্তব্য প্রদানের জড়তার ফলে লেখনীর মাধ্যমে চিন্তা ও দর্শনকে ছড়িয়ে দেবার প্রবল প্রচেষ্টা আমরা তাঁর মধ্যে লক্ষ করি বারবার।

১৯১৯ সালের ১লা মে গ্রামসি তার বিপ্লবী বন্ধুদের নিয়ে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশের উদ্যেগ গ্রহণ করেন। যার মূল দর্শন ছিলো রাজনৈতিক আন্দোলনকে সাংস্কৃতিক বার্তাবরণের সাথে যুক্ত করা। রাজনৈতিক যান্ত্রিকতার বিপরীতে প্রলেতারিয় সংস্কৃতির ঐতিহাসিক সত্যকে তাত্ত্বিক ভিত্তির উপর দাঁড় করানো ছিলো তা লক্ষ্য। ১৯২০ সালে বিভিন্ন কারখানায় শ্রেণী আন্দোলনের ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে গ্রামসি আবিষ্কার করেন সোস্যালিস্ট নেতৃত্বের উদাসীনতার নানা দিক। এ সময় গ্রামসি তৃতীয় আন্তর্জাতিক নির্দেশিত পথ অনুসরণ করেন এবং পর্টিকে সেই পথে পরিচালিত করার ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তৃতীয় আন্তর্জাতিকের প্রতি পূর্ণ আস্থা পোষণের মধ্য দিয়ে ১৯২০ সালের অক্টোবরে গ্রামসি মিলানের কমিউনিস্ট ইস্তেহারের খসড়ায় স্বাক্ষর করেন এবং পরবর্তী সময়ে নিউ অর্ডার পত্রিকাকে দৈনিক ভাবে প্রকাশ করেন। এই পত্রিকার মাধ্যেমেই গ্রামসি তার তাত্ত্বিক বক্তব্য প্রচার করে বিপ্লবী ধারাকে শক্তিশালী করার লড়াই চালিয়ে যান। 

নানা লড়াই সংগ্রামের কালপর্বে ১৯২১ সালের ২১ জানুয়ারি ইতালিতে কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে ওঠে। গ্রামসি কেন্দ্রীয় কমিটিতে নির্বাচিত হন এবং ১৯২২ সালের মে মাসে ইতালির কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধি হিসেবে মস্কোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সভায় যোগদান করেন। 

মস্কোতে অবস্থানকালে গ্রামসি এক দুর্ঘটনার শিকার হন এবং ছয়মাস অসুস্থতায় ভোগেন। সেখানে অসুস্থতার সময় পরিচিত হন গিউলিয়া নামক রাশিয়ান এক রমনীর সাথে। ঘটে পরিণয় এবং গ্রামসি গিউলিয়ার ভালোবাসায় জন্ম নেয় দু’টি সন্তান। ১৯২৪ সালে মস্কো থেকে এসে ইতালিতে পার্টির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তখন ইতালিতে পার্টির উপর শুরু হয় ফ্যাসিবাদী নির্যাতন। দেশে ফিরে অল্প সময়ের মধ্যে ‘একতা’ (L.Unita) পত্রিকা প্রকাশ করেন। ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় গ্রামসি অধিকতর উদ্যোগী হন ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য প্রতিষ্ঠায়। তাই পত্রিকার নাম দিয়েছিলেন ‘একতা’। আমাদের দেশেও পার্টির প্রকাশিত সাপ্তাহিকের নাম ‘একতা’। এবং দ্বিদলীয় দুর্বৃত্তায়নের বিপরীতে একটি বিপ্লবী ঐক্যের পথে আজও এদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলন প্রবাহমান। 

ইতালিতে ফ্যাসিবাদী নির্যাতনের মুখে আধা গোপনীয় পথ গ্রহণ করে এবং সেই সাথে শ্রমজীবী মানুষের পাশে থেকে গণভিত্তি গ্রহণের নানা কৌশলগত পথ অনুসরণ করে পার্টি।

ফ্যাসিবাদী শাসক মুসোলিনি তার পুলিশ বাহিনীকে লেলিয়ে দেয় বিপ্লবীদের গ্রেফতারের জন্য। ১৯২৬ সালের ৮ নভেম্বর গ্রামসি গ্রেফতার হন। ১৯২৮ সালে ফ্যাসিস্টি সরকার বিশ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে গ্রামসিকে। বিশ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবার পর তাকে পাঠানো হয় তুরিন বাড়ি কারাগারে। যাত্রাপথে তাকে বেঁধে রাখা হয় গরুর গাড়ির পেছনে এবং নির্দয় ভাবে টেনে নেয়া হয় কারাগারে। ফলে শারীরিকভাবে আবারো অসুস্থ গ্রামসি স্বাভাবিক ওঠা-বসা পর্যন্ত করতে অসমর্থ হয়ে পড়েছিলেন। কারাগার জীবনের প্রথম সময়গুলোতে মধ্যরাতে তিন বার জাগানো হতো। মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন করার ঘৃণ্য ফ্যাসিবাদী নির্যাতনের নমুনা ছিলো এগুলো। কারাগারে নূন্যতম লেখাপড়ার অধিকার আদায়ে কারা অভ্যন্তরে সংগ্রাম শুরু করেন তিনি। পরবর্তিতে কারাগারে তাকে লোখাপড়ার অনুমতি দেন কারা কর্তৃপক্ষ। এতটুকু সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি লিখে চলেন তার নানামুখি দর্শনের রাজনৈতিক বক্তব্য। ২ হাজার ৮৪৮টি পাতার ৩২টি নোট বই। যা ‘প্রিজন নোটস’ নামে পৃথিবীর মার্কসীয় বিপ্লবীরা খুঁজে পান নতুন চিন্তার আঁধার। ফ্যাসিবাদী কারাগারে খুব কৌশলে এসব নোটে তিনি বেশ কিছু শব্দ ব্যবহার করেছেন। যেমন মার্কসীয় দর্শনকে বলেছেন ‘প্রাক্সিম দর্শন’, লেনিনকে ‘ইলিসি’, শ্রেণিকে বলেছেন ‘সামাজিক ’ ইত্যাদি। 

নানা রকম অসুখে জর্জরিত ছিলেন গ্রামসি। অনিদ্রা, মাথার যন্ত্রণা, যক্ষা সহ বহুবিধ অসুখে আক্রান্ত হন কারাগারে। এমন অবস্থায় কেউ কেউ তাকে মুসলিনির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার পরামর্শও দিয়েছিলেন। একজন বিপ্লবী ফ্যাসিবাদ এর কাছে ক্ষমা চাইতে ঘৃণা করে এমন উদাহরণই তিনি সৃষ্টি করেছিলের। মৃত্যু পথযাত্রী হয়েও শেষ দিন পর্যন্ত লড়েছেন কারা অভ্যন্তরে। ১৯৩৩ সালের মার্চ মাসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন গ্রামসি। বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলেন। সেই সময় গ্রামসি সহ কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের মুক্তির দাবিতে রমারোলা সহ বিভিন্ন খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবিরা আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। কেননা ফ্যাসিস্ট জেল ছিল এমনই এক নির্যাতনের কারখানা ও অন্ধকার জগত যার বিবরণ বেশি দিতে হয় না। একটি মাত্র উদাহরণই হয়তো যথেষ্ট হবে। ইতালির কমিউনিস্ট আন্দোলনকে গুড়িয়ে দেবার মতলবে মুসোলিনি স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে ৬৩৬ জন বন্দিকে ৩,৪০৪ বছরের জন্য জেল দিয়েছিলেন। বিপ্লবী গ্রামসির শ্যালিকার কাছে সারা পৃথিবীর মানুষ ঋণী বিশেষ এক কারণে আর তা হলো তাতিয়ানা নামের এই মেয়েটিই গ্রামসির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন এবং নিজের অস্তিত্ব প্রায় বিপন্ন করে সর্বদা পাশে ছিলেন গ্রামসির কারা জীবনের মানসিক শক্তির উৎস হয়ে। মৃত্যু পথযাত্রী বিপ্লবী গ্রামসিকে ১৯৩৩ সালের ডিসেম্বর সালে একটি ক্লিনিকে নিয়ে যেতে কারা কর্তৃপক্ষকে রাজী করানো হয়। পুলিশের সার্বক্ষণিক প্রহরায় নিকৃষ্ঠ মানের সেই ক্লিনিকে ছিলো ১ বছর ৯ মাস। অত:পর মৃতপ্রায় গ্রামসিকে ১৯৩৫ সালের আগষ্ট মাসে রোমের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। প্যারোলে মুক্তির পর উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাবার শেষ উদ্যোগটি সফল হলোনা। ১৯৩৭ সালের ২৫ এপ্রিল মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে জ্ঞান হারালেন এবং ২৭ এপ্রিল পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন। অসংখ্য বিপ্লবী চিন্তাকে শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির সংগ্রামের জন্য রেখে গেলেন তার ‘প্রিজন নোট বুকে’। তাতিয়ানা প্রিজন নোটগুলো পুলিশের দৃষ্টি এড়িয়ে অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছিলেন এবং একটি ব্যাংকে সংরক্ষণ করেছিলেন। একবছর পর সেগুলো মস্কোতে পাঠানো সম্ভব হয়। সেখান থেকে পরবর্তীতে নোটগুলো ইতালির কমিউনিস্ট পার্টির কাছে ফিরে আসে। দীর্ঘ সময় পর হলেও আমরা জানতে পারি গ্রামসির ভাবনা জগৎ। অন্তোনিত্ত গ্রামসি মূলত রাজনৈতিক তাত্ত্বিক এবং দল প্রধান হওয়া স্বত্ত্বেও সংস্কৃতির রাজনীতির প্রবক্তা। রাজনীতিকে সংস্কৃতিহীন যান্ত্রিকতা থেকে মুক্তির প্রচেষ্টায় ভেবেছেন। তাই নিউ অর্ডার পত্রিকাটি মার্কসবাদী বিপ্লবী ধারার ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক বিনির্মাণের চিত্রপট। গ্রামসির নিউ অর্ডার পত্রিকার মূল লক্ষ্য ছিলো শ্রমজীবী শ্রেণির নৈতিক ও সাংস্কৃতিক মান উন্নয়ন এবং সামাজিক নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য তাদের প্রস্তুত করে তোলা। শ্রমিকেরা শুধুমাত্র দাবি আদায়ের জন্য লড়বে তা নয় সেই সাথে তারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে জাগিয়ে তুলবে সেই নৈতিক বোধ যা তাদের মধ্যে বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গির সাথে বিপ্লবী চেতনার মিশ্রণ ঘটাবে। গ্রামসি বলেছিলেন, “প্রতিটি বিপ্লবের পেছনেই রয়েছে কঠিন ও বিতর্কিত চিন্তার ইতিহাস।” তাঁর মতে শ্রমিকশ্রেণি ও মেহনতি মানুষ যদি শুধু মাত্র কারিগরি জ্ঞান লাভ করে তবে তা কেবল মালিক শ্রেণিরই লাভ হবে। তাই এ বিদ্যার সাথে মেহনতী মানুষকে দিতে হবে সার্বিক জ্ঞান যা দ্বারা তার অধিকারের সবটুকু আদায়ের যুক্তিযুক্ত প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারে।
 
গ্রামসি ১৯১৯ সালের ১২ জুলাই নিউ অর্ডার পত্রিকার সম্পাদকীয়তে বলেছিলেন, শ্রমিক ও কৃষকদের বোঝানো প্রয়োজন যে, তাদের নিজেদের স্বার্থেই প্রয়োজন সার্বজনীন শৃঙ্খলার মধ্যে টেনে আনা এবং বিশ্বের সকল নির্যাতিত শ্রেণির বিশ্ব ধারণা গড়ে তোলা। 

নিউ অর্ডারের আর একটি সম্পাদকীয়তে আমরা গ্রামসির বক্তব্য খুঁজে পাই ১৯১৯ সালের ২৩ আগস্টে। সেখানে তিনি বলেছিলেন, “একটি কমিউনিস্ট সংস্কৃতির পত্রিকার উচিৎ প্রত্যেক ব্যক্তির মাঝে জীবনের উচ্চতর বিকাশের ধারণাকে উৎসাহিত করা। শ্রমিকগণ যখন কোন চিন্তাবিদ বা কবি শিল্পীদের নাম শোনে তখন তিক্ততার সাথে জিজ্ঞাসা করে। আমাদের কেন এসব শিক্ষা দেওয়া হয়নি ? সমাজ পরিবর্তনের জ্ঞান অর্জনের জন্য শ্রমজীবীদের মধ্যে কাজ এখনই শুরু হওয়া উচিত।

এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি যে শুধু গ্রামসিরই ছিলো তা নয়। লেনিন তাঁর ‘কি করিতে হইবে’ গ্রন্থে বলেছিলেন, “শ্রমিকগণ বুদ্ধিজীবীদের অবশ্যই জিজ্ঞাসা করতে পারে; ইতোমধ্যে আমরা যা জানি সেই সম্পর্কে কম বলুন, আমরা যা জানিনা সেই সম্পর্কে আমাদের জানান। আমাদেরকে দিন সেইসব সফল ধারণা বা জ্ঞান যা আমরা কারখানার জীবন থেকে কখনো শিখতে পারিনি।”

অন্তোনিত্ত গ্রামসির রাজনৈতিক দর্শনের নানা দিক রয়েছে যা এ লেখার সবটুকু সন্নিবেশ করা হয়নি। তবে প্রিজন নোটে যে মৌলিক বিষয়গুলোর মধ্যে জোর দিয়েছেন বুদ্ধিজীবীদের প্রসঙ্গ এবং হেজিমনি ধারণা। বুদ্ধিজীবীদেরকে তিনি দু’টি ভাগে ভাগ করে তার চিন্তা বিবৃত করেছিলেন। 

এক ট্রাডিশনাল বুদ্ধিজীবী এবং দুই অরগ্যানিক বুদ্ধিজীবী। বিপ্লবী শ্রেণির সাথে অরগ্যানিক বুদ্ধিবৃত্তিকে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ততার নির্দেশ তিনি দিয়েছিলেন। সমাজের সব মানুষের মধ্যে সমর্থন বা জাতীয় ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেবার প্রেরণা রয়েছে। রয়েছে সমাজ বদলের ইচ্ছাকে সৃষ্টি করে মানুষের সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টা। তাই সংস্কৃতিহীন যান্ত্রিক রাজনীতির মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক বিপ্লবী সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। সাংস্কৃতিক বিনির্মাণের ধারায় একটি বিপ্লবকে এগিয়ে নেয়া ও তা স্থায়ী ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করে মেহনতী মানুষের সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠায় প্রবল দার্শনিক প্রেরণায় বেঁচে থাকবেন অন্তোনিত্ত গ্রামসি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত