তখন তারা জল’টা ঘোলা করেই খায়

প্রকাশ : ২১ মে ২০১৬, ১৯:০৭

প্রসঙ্গঃ বিবাহ!
ধরুন আপনি বিয়ে করতে চাইছেন। আপনার কোন প্রেমিকা নেই কিংবা গার্লফ্রেন্ড নেই। তাহলে এই যে আপনি বিয়ে করতে চাইছেন সেটা কিভাবে জানান দিবেন?

আপনি আসলে নানান ভাবেই সেটা জানান দিতে পারেন। আপনি বলতে পারেন

-সন্তানের বাবা হতে ইচ্ছে করছে। আমার সন্তানের মা হতে চায় এমন কেউকে খুঁজছি।

আবার আপনি বলতে পারেন
- একজন সঙ্গী খুব দরকার। জীবনসঙ্গী খুঁজছি।
আপনি এও বলতে পারেন
-বিছানায় খুব একা লাগে। ভালো লাগে না একা একা বিছানায় এপাশ-ওপাশ করতে। একজন সঙ্গী খুব দরকার।

এই যে নানান ভাবে আপনি জানান দিচ্ছেন আপনি বিয়ে করতে চাইছেন; এতে কিন্তু সহজেই বুঝা সম্ভব কোন কারনে আপনি বিয়ে করতে চাইছেন কিংবা আপনার মানসিকতা কেমন। অর্থাৎ আপনার বলার ধরন কিংবা ভাষার ব্যাবহার দেখেই আপনার মন মানসিকতা বুঝা সম্ভব।

সেলিম ওসমানের অডিও আলাপ শুনে বিবাহ বিষয়ক এই ভাবনা মনে এসছে!

প্রসঙ্গঃ রাজনীতি!

ইউরোপে সপ্তাহ খানেক আগে “ইউরোভিশন” প্রতিযোগিতা হয়ে গেলো সুইডেনে। এটি অনেকটা বাংলাদেশের “ক্লোজ আপ ওয়ান” কিংবা ভারতের “ইণ্ডিয়ান আইডলের” মতো গানের প্রতিযোগিতা। ইউরোপের সব গুলো দেশ থেকে প্রতিযোগীরা এই প্রতিযোগিতায় গান গায়। পুরো ইউরোপের মানুষরা এসব গান শুনে ভোট দেয়। ভোট দেয়ার নিয়ম হচ্ছে আপনি যেই দেশে থাকেন, সেই দেশের প্রতিযোগী ছাড়া বাদ বাকী দেশ গুলোর প্রতিযোগী’কে ভোট দিতে পারবেন(আমি নিজেও ভোট দিয়েছি বেশ কয়েক বছর) এছাড়া বিশেষজ্ঞ বিচারকরাও নাম্বার দেয়।

তো এইবার এই প্রতিযোগিতায় রাশিয়ার প্রতিযোগী ছিলেন হট ফেভারিট। কিন্তু প্রতিযোগিতার ফাইনালের দিন ইউক্রেনের প্রতিযোগী এমন একটা গান গাইলেন; যেই গানের মাধ্যমে রাশিয়ার সাথে ইউক্রনের রাজনৈতিক(ক্রাইমিয়ান তাতার) ব্যাপারটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আর এতেই বিশেষজ্ঞ বিচারক থেকে শুরু করে পুরো ইউরোপের মানুষ ইউক্রেনের প্রতিযোগী’কে চ্যাম্পিয়ন বানিয়ে দিলো। হট ফেভারিট রাশিয়ান প্রতিযোগী দ্বিতীয় হওয়া তো দূরে থাক হয়েছে তৃতীয়!

গান-বাজনার মতো শিল্প কলাতেও ইউরোপীয়রা রাজনীতি মিশিয়ে ফেলেছে মনের আনন্দে। রাশিয়াকে যেহেতু বেশীরভাগ ইউরোপের দেশ গুলো নিজেদের শত্রু রাষ্ট্র হিসেবে ভাবে, তাই রাশিয়ার প্রতিযোগী জিতে যাচ্ছে, সেটা তাদের ভালো লাগেনি। শেষমেশ তাই এরা রাশিয়ার সাথে চলমান দ্বন্দ্বে লিপ্ত ইউক্রেনের প্রতিযোগীকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়ে দিয়েছে।

এ ঘটনা থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে, গান-বাজনা থেকে শুরু করে খেলাধুলা কোন কিছুই আসলে রাজনীতির ঊর্ধ্বে নয়।

হেফাজতে ইসলাম’কে নিয়ে নানান কথা হচ্ছে এখন। ধারনা করা হচ্ছে সাংসদ সেলিম ওসমান এখন হেফাজতে ইসলাম’কে ব্যাবহার করছে নিজের প্রয়োজনে। শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে কান ধরে উঠবশ করানো যে ভালো কাজ হয়েছে; সেটি এখন আর সেলিম ওসমানকে বলতে হচ্ছে না; তার হয়ে হেফাজতে ইসলাম বলে দিচ্ছে।

এই নিয়ে দেখছি লোকজন হেফাজতের উপর খুব চটেছে। তারা বুঝতেও পারছে না রাজনীতি এমন এক জিনিস যেখানে বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খায়! আমরা সাধারণ মানুষরা কখনো তাদের খাওয়ার “বস্ত” কিংবা খাওয়া শেষে পান করার “জল” মাত্র! এখানে আরেকটা বিষয় বলতেই হচ্ছে- বাঘে আর মহিষে যখন এক ঘাটে জল খায়; তখন তারা জল’টা ঘোলা করেই খায়।

আমিনুল ইসলাম এর ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত