পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলাকে ভূমিহীন ঘোষণা

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২২, ১৩:৪৯

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক যুগান্তকারী অর্জনে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন ২৬ হাজার ২২৯টি ঘর হস্তান্তরের সময় এ ঘোষণা দেন।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড়ে ৪ হাজার ৮৫০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন লোক খুঁজে পেয়েছে সরকার এবং তাদের সবার জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, মাগুরা জেলায় ৬৭৮টি পরিবারের জন্য ঘর তৈরি করা হয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীন সকলের জন্য আশ্রয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সবগুলো উপজেলাসহ দেশের ৫২টি উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই ৫২টি উপজেলায় মোট ১৯ হাজার ৭৮০টি ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে বলে প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা বলেন, দুই জেলা ও ৫২টি উপজেলায় কাউকে ভূমিহীন পাওয়া গেলে দ্রুত তাদের জমিসহ ঘর দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ভূমিহীন ৫২ উপজেলা হলো ঢাকার নবাবগঞ্জ, মাদারীপুর সদর, শরীয়তপুরের ডামুড্যা, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী, টাঙ্গাইলের গোপালপুর, মানিকগঞ্জের ঘিওর ও সাটুরিয়া, রাজবাড়ীর কালুখালী, ফরিদপুরের নগরকান্দা, নেত্রকোণার মদন, ময়মনসিংহের ভালুকা, নান্দাইল, ফুলপুর ও ফুলবাড়িয়া, জামালপুরের বকশীগঞ্জ, চট্টগ্রামের পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর ও রামগঞ্জ, ফেনীতে ফেনী সদর, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, পঞ্চগড়ের আটোয়ারী, পঞ্চগড় সদর, দেবীগঞ্জ, তেতুলিয়া ও বোদা, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী, নীলফামারীর ডিমলা, নওগাঁর রানীনগর, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি, রাজশাহীর মোহনপুর, চারঘাট ও বাঘা, বগুড়ার নন্দীগ্রাম ও দুপচাঁচিয়া, নাটোরের বাগাতিপাড়া, পাবনার ঈশ্বরদী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু, সাতক্ষীরার তালা, মাগুরায় মাগুরা সদর, শ্রীপুর, মোহাম্মদপুর ও শালিখা, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া ও পটুয়াখালীর দশমিনা।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, আশ্রয়ণ-২-এর তৃতীয় প্রকল্পে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে মোট ৬৭ হাজার ৮০০টি ঘর দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে গত ২৬ এপ্রিল ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে, ২১ জুলাই হস্তান্তর করা হয়েছে ২৬ হাজার ২২৯টি এবং বাকি ৮ হাজার ৬৬৭টি ঘর নির্মাণাধীন রয়েছে। এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি এবং ২০ জুন প্রথম দুই দফায় দেশে গৃহহীনদের মধ্যে ভূমিসহ এক লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি আধা-পাকা ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে আশ্রয়ণ ঘরের জন্য প্রায় ৪ হাজার ২৯কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।

এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৪৬২টি ভূমিহীন পরিবারকে সংগৃহীত জমিতে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এই আবাসন প্রকল্প গ্রামীণ অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত করতে অবদান রাখবে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও সরকার আশ্রয়-২ প্রকল্প বাস্তবায়ন চালিয়ে যাবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সাহস২৪.কম/এএম/এসএস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত