কার্বন নিঃসরণ হ্রাস ও লিঙ্গ সমতা ভিত্তিক টেকসই বিশ্ব নিশ্চিতের আহ্বান প্রতিমন্ত্রীর

প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২২, ১২:৫১

সাহস ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং প্রতিশ্রুতির আন্তরিক বাস্তবায়নের মাধ্যমেই কার্বন নিঃসরণ হ্রাস ও লিঙ্গ সমতা ভিত্তিক টেকসই বিশ্ব নিশ্চিত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

মঙ্গলবার (২২ মার্চ) রাতে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সাধারণ পরিষদ হলে কমিশন অন দ্যা স্টাটাস অব উইমেন (সিএসডব্লিউ) এর ৬৬তম অধিবেশনে এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সিএসডব্লিউ-এর এবারের প্রতিপাদ্য হলো, ‘জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস নীতি ও কর্মসূচিসমূহের প্রেক্ষাপটে লিঙ্গ-সমতা অর্জন এবং সকল নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন’।

প্রতিমন্ত্রী সিএসডব্লিউতে পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।

প্রতিমন্ত্রী বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সৃষ্ট বাংলাদেশের নাজুক পরিস্থিতি ও দুর্যোগ ঝুঁকির উপর আলোকপাত করেন এবং এক্ষেত্রে নারী ও মেয়েদের অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাবের কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক ২০২১ অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ৭ম, যদিও বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে আমাদের অবদান মাত্র ০.৪৭ শতাংশেরও কম।

ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম-এর ৫৫ সদস্যের নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কপ-২৬ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর বেঁচে থাকার জন্য অর্থায়ন নিশ্চিতের উপর জোর দেয়ার যে আহ্বান জানিয়েছিলেন তা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলো নারীরা।

লিঙ্গ সংবেদনশীল জলবায়ু কর্মসূচি, অভিযোজন, প্রশমন, ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস নিশ্চিত করার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বিভিন্ন আইন, নীতি, ও কর্মসূচিসমূহের কথা উল্লেখ করেন নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।

এছাড়া বাংলাদেশের জলবায়ু নাজুক অঞ্চলসমূহে নারীদের অভিযোজন ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জনে গৃহীত জলবায়ু ও লিঙ্গ-সংবেদনশীল বাজেট, লিঙ্গ-সংবেদনশীল কোস্টাল অভিযোজন প্রকল্প, সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি, জাতীয় রেজিলিয়েন্স কর্মসূচিসহ অন্যান্য পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।

সাইক্লোন প্রস্তুতি কর্মসূচি’তে ৩৮ হাজার নারী স্বেচ্ছাসেবী অন্তর্ভূক্তিকরণের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, এরফলে এই কর্মসূচিটি জাতিসংঘের পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড ২০২১ অর্জন করেছে যা দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে লিঙ্গসমতার অনন্য উদাহরণ।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এ জাতীয় প্রকল্পসমূহ নারী ও মেয়েদের দুর্যোগ পূর্ববর্তী হুইসেল ব্লোয়ার হিসেবে কাজ করার ক্ষমতাকে সুদৃঢ় করবে, সম্পদ রক্ষা করবে, এবং জীবিকা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বৈচিত্র আনবে। জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে নারী ও মেয়েরা যে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে তা কাটিয়ে উঠতে আর্থিক, কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সম্পদের সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।

এছাড়া তিনি ‘সমতার নীতি’ ও ‘লিঙ্গ-জলবায়ু ন্যায়বিচার’ চালু করার উপরও জোর দেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত