বেড়ে ওঠার চ্যালেঞ্জ স্বপ্নের

প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০১৬, ১৯:১৫

রাবি প্রতিনিধি

প্রচণ্ড রক্তপাতে ভেসে গেছে স্টেশনের বদ্ধ ঘরের মেঝে। একটা ময়লা, ছেড়া বস্তার ওপর শুয়ে আছেন অসহায় মা। পাশেই নোংরা গেঞ্জির ওপর শুয়ে হাত-পা নাড়ছে নবজাতক শিশুটি। মা-সন্তানকে আশ্রয় দেওয়ার মত কেউ নেই। একজন নারীকে পাওয়া গেল যিনি নাড়ী কেটে দিলেন। 

কাঁপছিল বাচ্চাটা। রেল স্টেশনের পরিত্যক্ত যাত্রী বিশ্রামাগারটি আজ যেন মানবতার ভাঁগাড়। হতবাক আমরা কয়েকজন। কিভাবে কি করা যায় ভেবে পাচ্ছিনা। যেন ভাবনার কিনারা হারিয়ে ফেলেছি। অবশেষে সহৃদয়বান কয়েকজনের সহযোগিতায় অ্যাম্বুলেন্স যোগে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বন্ধু নাজমুস সাকিব কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে স্টেশন বাজার থেকে এক হাজার টাকা ওঠালো। হলের এক ছোট ভাইয়ের গামছা দিয়ে মোড়ানো হয় বাচ্চাটিকে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) স্টেশন বাজার বিশ্রামাগারের পাশে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী বাচ্চা প্রসব করেছেন। শুক্রবার রাতে বাচ্চাটির জন্ম হয়। শনিবার রাফিকুল ইসলাম ও তার বন্ধুরা স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে (রামেক) ভর্তি করানো হয়।

শিশুটির নাম রাখা হয়েছে স্বপ্ন। সদ্যজাত শিশুটিকে স্বপ্নময় করে গড়ে তোলার জন্যই এই নাম রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রফিকুল ইসলাম।

জানা যায়, ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন। এমনকি কথা বলতে পারেন না। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভিক্ষা করে দিনাতিপাত করতেন এবং স্টেশনের পাশে ঘোরাঘুরি করতেন, রাতে ঘুমাতেন। এরমধ্যেই কোনো এক লম্পটের লালসার শিকার হয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
 
উদ্ধারকারী দলের আরেক সদস্য নাজমুস সাকিব বলেন, প্রতিটি শিশু বেড়ে ওঠার অধিকার নিয়ে জন্মায়। সে যেভাবেই হোক না কেনো। তবে শুক্রবার রাতে স্টেশনে জন্মানো শিশুটির সেই অধিকারগুরো রক্ষা করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে। তাই স্বপ্নকে স্বপ্নময় করে তোলার চ্যালেঞ্জ নিয়েই নাম রাখা হয়েছে ‘স্বপ্ন’।

রফিকুল ইসলাম আরো জানান, মা ও শিশু সুস্থ থাকায় হাসপাতাল থেকে তাদের রিলিজ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মা-শিশুকে স্টেশনের একটি পরিত্যক্ত কক্ষে রাখা হয়েছে। সেখানে রেখেই তাদের দেখ-ভালের দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। যেকোন ভাবে কেউ সাহায্য পাঠাতে চাইলে আমাকে অথবা সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ করছি। 

বিকাশ: ০১৯৩২৬৬৫৬২৪ (রফিক)

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত