সরিষার তেলের বিস্ময়কর গুণ

প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২:০৩

সাহস ডেস্ক
ছবি - সংগ্রিহিত

মাছ ও ডিম ভাজা, ভর্তার বা ঝালমুড়ির জন্য সরিষার তেল ছাড়া চিন্তাই করতে পারেন না অনেকে। কেবল স্বাদের জন্য নয়। বহুকাল ধরে এই তেল ব্যবহারের পেছনে আরো অনেক কারণ রয়েছে। বলা হয়, সরিষার তেল হলো এ অঞ্চলের অলিভ অয়েল। ওজন কমাতে  আমরা খাবারের দিকে গুরুত্ব দিলেও কোন তেল দিয়ে রান্না করা হচ্ছে সে বিষয়টি এড়িয়ে যায় অনেক সময়। আমরা যে তেলে রান্না করি তাতে স্যাচুরেটেড এবং আনস্যাচুরেটেড, দু ধরনের ফ্যাট থাকে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট আমাদের শরীরের জন্য খারাপ হলেও, আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট কিন্তু শরীরের উপকার করে। সেই হিসেবে শরীরের ভালোর জন্য সরিষা তেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘানি থেকে আনা সরিষার তেল স্বাস্থ্য এবং ত্বকের জন্যে খুবই ভালো। বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হল করোনারি হার্ট ডিজিজ । আর রান্নার তেলের কারণে এই হার্টের রোগের ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়ে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, সরিষার তেল মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত যা কোলেস্টেরলের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে এবং করোনারি হার্ট ডিজিজের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। সরিষার তেলের কড়া ঝাঁঝের জন্য আজকাল অনেকে ব্যবহার করতে চান না। কিন্তু এতে আছে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি অ্যাসিড কেবল খাবারের স্বাদই উন্নত করে না, রক্তে চর্বির মাত্রাও হ্রাস করে।

সরিষার তেলের কিছু বিসম্ময়কর গুণের কথা :

  • এই তেলের স্বাদ অনন্য। সরিষা থেকে তৈরি করা হয়। সরিষা সেই শস্যের প্রজাতির অংশ যা থেকে ক্যানোলা তেল তৈরি করা হয়।
  • বাংলা, বিহার, ওড়িশা, আসাম এবং নেপালে সরিষার তেলে রান্না ঐতিহ্যের অংশ। কিছু কাশ্মীরি খাবারও তৈরি করা হয় সরিষার তেলে।
  • ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরিষার তেল দারুণ কাজের। বলা হয়, এতে আছে ছত্রাক প্রতিরোধী উপাদান। তেলটিকে এই গুণ দিয়েছে অ্যাললি আইসোথিয়োসায়ানেট।
  •  এক টেবিল চামচ সরিষার তেলে রয়েছে ১২৬ ক্যালরি।
  •  এই তেলে ঝাঁঝালো গন্ধ রয়েছে যার কারণে কীট-পতঙ্গ দূরে থাকে। তাই অনেক সময় পিঁপড়া এবং মশা তাড়াতে সরিষার তেল মিশ্রিত তরল স্প্রে করা হয়।
  • এই তেলে আছি দুটো গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাটি এসিড- ওয়েলিক এসিড এবং লিনোলিক এসিড। এগুলো চুলের দারুণ টনিক। মাথায় মেসেজ করা হলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। চুলের বৃদ্ধিও গত পায়।
  • একে উষ্ণ তেল হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তাই শীতের মৌসুমে বেশ কাজে লাগে।
  • আয়ুর্বেদে সর্দি ও কাশি দূর করতে সরিষার তেলের ব্যবহার রয়েছে।
  • দেহের বিষাক্ত উপাদান ঝেড়ে ফেলতে সরিষার তেলের ব্যবহার বহুল প্রচলিত। খাওয়া হলে বা ত্বকে লাগানো হলে ঘাম বের হয়। এর মাধ্যমেই দেহের বাজে উপাদান বের হয়ে যায়।
  • রিউমাটিজম এবং আরথ্রাইটিসের চিকিৎসায় ওষুধের সঙ্গে সরিষার তেলের ব্যবহার রয়েছে।
  •  দাঁতের যত্নে সরিষার তেলের সঙ্গে লবণ মিশিয়ে দাঁত মাজতে বলেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
  •  বিভিন্ন তেলের উপাদান নিয়ে গবেষণা চালায় অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (অলএমএস) এবং স্যার গঙ্গারনাম হসপিটাল। তাতে বলা হয়, সরিষার তেল কার্ডিওভাসকুলার ডিজিসের ঝুঁকি কমায় ৭০ শতাংশ। এটা অলিভ অয়েলের চেয়ে ভালো। কারণ অলিভ অয়েলে ওমেগা ৬ (এস৬) এবং ওমেগা ৩ (এন৩) ফ্যাটি এসিডের সুষম ভারসাম্য নেই।
  • বাড়িতে তৈরি ফেসপ্যাকে সরিষার তেল ব্যবহার করলে তা আরো কার্যকর হয়ে ওঠে।
  • তিসির পাউডারের সঙ্গে সরিষার তেলের ব্যবহারের খুশকি দূর হয়।
  • অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান থাকার কারণে সরিষার তেল আচার তৈরিতে অনন্য।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

সাহস২৪.কম/এবি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত