কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ১৬:২৯
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজার মহা-অষ্টমীতে সাড়ম্বরে উদযাপিত হলো কুমারী পূজা। আজ বুধবার (১৭ অক্টোবর) সকাল থেকে এ পূজাকে কেন্দ্র করে মণ্ডপে মণ্ডপে অঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, আরতি নিবেদন করেছেন পূজারীরা।
কুমারী পূজা মাতৃরূপে ঈশ্বরের আরাধনা বলে মনে করেন সানতন ধর্মাবলম্বীরা। দুর্গাপূজার অষ্টমিতে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা করে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে রামকৃষ্ণ মিশনে পালিত হয় কুমারী পূজা।
কুমারী পূজাকে ‘মাতৃরূপে’ ঈশ্বরের আরাধনা বলে মনে করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। দুর্গাপূজার অষ্টমীতে কুমারী কন্যাকে প্রতিমা হিসেবে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে পালিত হয় এ পূজা। মূলত সাত থেকে আট বছরের অজাতপুষ্প, সুলক্ষণা, ব্রাহ্মণ, অবিবাহিত কুমারী কন্যাকে প্রতিমা বানিয়ে পূজা করা হয়।
আজ বুধবার কুমারী পূজা উপলক্ষে সরেজমিনে রাজধানীর রামকৃষ্ণ মঠে গেলে দেখা যায়, ঢাক, খোল, করতালের বাজনা আর উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে মঞ্চে অধিষ্ঠিত করা হচ্ছে কুমারীকে। নিবেদন করা হচ্ছে শ্রদ্ধা।
পূজার পর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এক নারী পূজারী বলেন, ‘এ কুমারী পূজার মাধ্যমে আমরা প্রার্থনা করি পুরা বিশ্ব যেন নারী জাতিকে শ্রদ্ধা করে, সম্মান করে। কারণ নারীদের প্রতি সহিংসতা অনেক বেড়েছে, আমরা দেখতে পাচ্ছি’।
আরেক পূজারী বলেন ‘আমরা সাক্ষাৎ মায়ের পূজা করি। এটা ঠাকুরের আদর্শ’।
মঠে এবারে কুমারী দেবী করা হয়েছিল মানিকগঞ্জের খাবাশপুরের আট বছর বয়সী শিশুকন্যা মিতালী চক্রবর্তীকে। সবার উদ্দেশে কুমারী এ দেবী বলেন, ‘সবাই সুখে থাকুক, শান্তিতে থাকুক, সবার পূজা ভালো কাটুক’।
কুমারী পূজার গভীর মর্মবাণী ও দর্শন প্রসঙ্গে মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ মহারাজ বলেন, ‘এ কুমারী সব জগতের বাক্যস্বরূপা, বিদ্যাস্বরূপা। তিনি এক হাতে অভয় এবং অন্য হাতে বর প্রদান করেন’।
মাতৃজাতিকে শ্রদ্ধার সাথে মূল্যায়ন করাই কুমারী পূজার আদর্শ জানিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, ‘কুমারীর বার্তা এই প্রত্যেককে মাতৃজাতির ভেতর দেবীজ্ঞানে তাঁদের শ্রদ্ধা করো। অশ্রদ্ধার সঙ্গে কখনো কোনো মহিলাকে দেখতে নেই’।
একই দিনে কুমারী পূজার পর অষ্টমীবিহিত পূজা ও সন্ধি পূজার মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে দুর্যোগ থেকে মুক্তির প্রার্থনা করেন ভ্ক্তরা।
প্রার্থনা প্রসঙ্গে এক পূজারী বলেন, যেন ‘আজকে পূজার মধ্য দিয়ে নিজেকে দেশের জন্য একজন উপযুক্ত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে পারি।’
মানব জাতির সার্বিক মঙ্গল কামনা করেন আরেক পূজারী, বলেন, ‘মা যেন সবাইকে সুখে শান্তিতে রাখুক, মঙ্গল করুক।’