কুমিল্লার বিস্তীর্ণ মাঠে দুলছে বিনা ধান
'মিনিকেট' প্রতারণা ঠেকাতে মাঠে আসছে বিনা ধান-২৫
প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৪, ১৯:৫৫
সারা দেশে ভাতের চিকন চালের অভাব মিটাবে বিনা ধান-২৫। এটি বাজারের কথিত মিনিকেট চাউলের প্রতারণা ঠেকাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করছেন বিনার (বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট) কর্মকর্তারা। এক বছরে কুমিল্লা অঞ্চলে এর আবাদ বেড়েছে ১২গুণ। কুমিল্লা অঞ্চলে গত বছর ৯০ হেক্টর জমিতে বিনা ধান ২৫ চাষ করা হয়। এবার তা বেড়ে প্রায় এক হাজার হেক্টর হয়েছে।
এই ধানের চাল চিকন ও স্বাদ ভালো হওয়ায় চাষিরা এটিকে আসল মিনিকেট বলে থাকেন। বাজারে এ চালের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় জেলার কৃষকরা এখন এই ধান চাষে ঝুঁকছেন। তারা বলছেন, রোগ-বালাই কম এবং অল্প সময়ের মধ্যে ফলন পাওয়া যায় বিধায় এই ধান চাষে লাভ বেশি।
সরেজমিনে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কুন্দারঘোড়া এলাকায় দেখা যায়, মাঠজুড়ে দোল খাচ্ছে বিনা ধান-২৫। খেতের পাকা ধান পর্যবেক্ষণ করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। পরিপক্ব হওয়ায় এরই মধ্যে অনেকেই ধান কাটতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ আবার ধান কাটার পর মাঠেই মাড়াই করছেন। এলাকার কিষান-কিষানিরা এখন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বুড়িচং উপজেলা কৃষি অফিসার আফরিণা আক্তার, মুরাদনগর উপজেলা কৃষি অফিসার পাভেল পাপ্পু খান ও দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি অফিসার বানিন রায় বলেন, কুমিল্লার মাঠে বিনা ধান- ২৫ বিপ্লব ঘটিয়েছে। এক বছরে এর আবাদ বেড়েছে কয়েকগুণ। কৃষক পর্যায়ে এর ভালো সাড়া পড়েছে।
বিনা কুমিল্লার ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ফাহমিনা ইয়াসমীন বলেন,কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষ সৌখিন। তারা চিকন চাউল খেতে পছন্দ করেন। এই চাউলের ভাত দীর্ঘক্ষণ সংরক্ষণ করা যায়। ভাত থাকে ঝরঝরে। এই এলাকায় ব্রি ধান ২৮এর ব্যাপক চাষ হতো। ব্লাস্টে ওই জাতটির ক্ষতি হওয়ায় কৃষকরা বিনা ধান ২৫ এর দিকে ঝুঁকেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মিজানুর রহমান বলেন, জেলায় প্রথমবার বিনা ধান-২৫ চাষ হয়েছে। প্রথমবারই ফলন প্রত্যাশার চেয়েও বেশি হয়েছে। এই ধানের গাছ শক্ত হওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখবে। এটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ধান, যা বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে। গাছ লম্বা হওয়ায় এটি থেকে কৃষক বেশি খড়ও পাচ্ছেন। গবাদিপশুর জন্য খড় পেয়ে তারা খুশি।