জীবনযাপনে ভারসাম্য থাকা চাই

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ১৭:৫১

ফয়জুন্নেসা মণি
নিজের জন্য সময় বের করলে নিজে উপকৃত হবেন

ভারসাম্য ব্যাপারটি আসলে বিষয়টি ব্যক্তিগত কৌশল বা প্রক্রিয়া। আপনি কিভাবে ক্যারিয়ারের সহকর্মীদের সাথে, প্রতিবেশির সাথে, পরিবারের সাথে, স্ত্রী-সন্তানের সাথে এমনকি বন্ধু ও স্বজনদের সাথে সাম্যঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলবেন তা কিন্তু একান্তই আপনার ব্যক্তিগত অভিপ্রায়। 

তবে জীবনের ভারসম্যতা রক্ষায় বা মেনেচলায় আছে কতিপয় কায়দা-কানুন।

ভারসাম্যপূর্ণ জীবন না হলে অনেক বিপত্তি ঘটতে পারে। আবার অনেকের মনে প্রশ্ন, ভারসাম্যময় জীবন গড়ে তোলার মতো একক কোন ফর্মূলা আমাদের হাতে আছে কি? আসুন জেনে নেওয়া যাক-

১. কোনো কাজের প্রয়োজনে অপরের সহযোগিতা নিন। অন্যের কাজে নিজেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। প্রতিবেশি ও সকহর্মীর কোন সাহায্যের দরকার আছে কিনা জেনে নিন। 

২. পরিবারের বড়দের পাশাপাশি ছোটদের দিয়েও কাজ করান, এতে একটা টিমওয়ার্ক তৈরি হবে। বাড়িতে মিলেমিশে, কখনো দলবেধে কাজ করুন। 

৩. নতুন বন্ধু, পরিবার, প্রতিবেশী, অফিস বস কিংবা কলিগ-এদের কোনরকম সহযোগিতা লাগবে কিনা জেনে নিন। 

৪. অপরাধ প্রবণতা মানসিক শক্তিকে দুর্বল করে, আবেগীয় মুহুর্তগুলোকে নষ্ট করে। যা আপনার বর্তমান সময়টাকে অচল করে তুলবে। 

তবে যুক্তির সঙ্গে পরিচিত হতে পারলে অপরাধ প্রবণতা বা এ মানসিকতা থেকে সহজে পার পাবেন।

৫. নিজেকে রক্ষা করার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে সাধ্যের মধ্যে থাকা। এ অভ্যাস অন্য লোকদের থেকে আপনাকে রক্ষা করবে। 

অন্য লোকদের আচরণ থেকে কি গ্রহণ করবেন বা কি করবেন না, সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিন। 

৬. আপনার দায়িত্ব ও শক্তি আপনাকে বুঝতে সাহায্য করবে কোনটা উচিত আর কোনটা উচিত নয়। সীমাবদ্ধতা বলে একটি কথা আছে। অর্থাৎ সবকিছু একটা সীমারেখা আছে, জীবনে সেটা মেনে চলুন।

৭. নিজের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখুন ও অঅস্থা নিয়ে কাজ করুন। পরিবার কিংবা অফিস- সবখানেই সমঝোতা করে চলতে হয়। সমঝোতার নামই জীবন। 

নিজের পরিবেশ-প্রতিবেশী সবকিছু নিয়ে নিজের মতো করে থাকার চেষ্টা করতে হয়। 

৮.  আপনি একজন ভালো মা, ভালো বাবা, ভাই, বন্ধু কিংবা ভালো অফিস কলিগ হোন না কেন, প্রথমেই নিজের প্রতি যত্নবান হোন। 

সবসময় টেনশনমুক্ত বা চাপ থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। নিজের জন্য সময় বের করলে শুধু যে নিজে উপকৃত হবেন তা নয়, বরং পরিবারের জন্যও প্রচুর কাজ করতে পারবেন। 

৯. কাজ শুরুর আগে তালিকা তৈরি করুন, গুরুত্বপূর্ণ কাজটি আগে করতে পারেন। 

১০. সময়ের কারণে অনেক সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজও করা হয়ে ওঠে না। তখন নিজেকে শান্ত রাখুন। 

আপনাকে বুঝতে হবে, শিশুরা এক মিনিটের নোটিশে অনেক কিছু পরিবর্তন করে ফেলে। এর জন্য নিজেকে সবসময় প্রস্তুত রাখুন যে কোনো সময়ে তাদের যে কোনো কাজ করে দেয়ার জন্য। 

১১. পরিবারের সদস্যদের সাথে আনন্দঘন সময় কাটান। ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক যে কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিন। 

১২. একসাথে মিলেমিশে থাকার দক্ষতা অর্জন করুন। পরিবারের যে কোনো বিষয়কে গভীরভাবে উপলব্ধি করুন। পরিবার, কাজ এবং বন্ধু সবাইকে নিয়ে জীবনের গতি সৃষ্টি করুন। 

এসব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে হবে। কোনো সুনির্দিষ্ট ফর্মূলা ছাড়াই সম্ভব। মনে রাখবেন, জীবনকে আনন্দময় করে তুলতে নির্দিষ্ট কোনো ফর্মুলা নেই। 

আপনার তৈরি করা প্রক্রিয়াটিই আপনার জন্য সর্বোত্তম ফর্মূলা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত